দেশ বিভাগে ফিরে যান

আত্মপ্রচারে মগ্ন মোদী, মূল্যবৃদ্ধির আঁচে পুড়ছে দেশের মানুষ!

February 26, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে গিয়ে দেশের মানুষ পুড়ছেন মূল্যবৃদ্ধির আঁচে। আর জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে বলে নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যতই দাবি করুন না কেন, এই ভয়াবহ বাস্তবে আরও একবার সিলমোহর দিল কেন্দ্রীয় রিপোর্টই। ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে সংস্থার সমীক্ষা বলছে, গত ১০ বছরে সাধারণ মানুষের মাথাপিছু মাসিক খরচ বেড়ে গিয়েছে আড়াই গুণ। ইউপিএ জমানার শেষ লগ্নে যেখানে আম জনতার গড় মাসিক খরচ ছিল ২ হাজার ৬৩০ টাকা, সেই পরিসংখ্যানটাই ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে শহরাঞ্চলে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৫৯ টাকায়। এই খরচটাই গ্রামাঞ্চলে ১ হাজার ৪৩০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৭৭৩ টাকা। শুধু খাওয়া খরচেই মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষের চলে যাচ্ছে আয়ের ৪২.৭ শতাংশ।

আর এই কারণেই প্রশ্ন উঠছে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীর নতুন স্লোগান নিয়ে। যেখানে নানাবিধ পথে দেশের উন্নয়নের গ্যারান্টি দিচ্ছেন তিনি। কিন্তু একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, তাঁর প্রচার এবং গ্যারান্টির অভিমুখ দু’টি—প্যাকেজ এবং ধর্ম। হয় তিনি রাজ্যে রাজ্যে গিয়ে প্যাকেজের ঘোষণা করছেন, অথবা মন্দিরে ঘটছে তাঁর অবস্থান। রবিবারও গুজরাতের দ্বারকায় দেশের দীর্ঘতম কেবল ব্রিজের উদ্বোধন করলেন তিনি। আর তারপর একগোছা ময়ূরপুচ্ছ হাতে রওনা দিলেন ভেট দ্বারকা দ্বীপে। সেখানে গেলেন, স্কুবা ডাইভিং করলেন এবং সাগরে নিমজ্জিত শ্রীকৃষ্ণের মন্দিরে পুজোও দিলেন। ডাঙায়-জলে ফটোগ্রাফার তৈরিই ছিলেন। ছবি উঠল, ভিডিও হল জলের তলায় ‘দ্বারকা নগরী’তে ধ্যানে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আম আদমির কাছে অন্য দিনের তুলনায় এই ‘বিশেষ দিনে’র কোনও ফারাক হল না।

শহর এবং গ্রামে সমীক্ষা করেছিল ন্যাশনাল সাম্পেল সার্ভে অর্গানাইনেশন। ‘মান্থলি পার ক্যাপিটা কনজামশান এক্সপেনডিচার’ নামে প্রকাশ হয়েছে সেই রিপোর্ট। তাতেই জানা যাচ্ছে, খাদ্যপণ্যের পিছনে শহরাঞ্চলে যদি মাথাপিছু গড় খরচ এখন হয় ২ হাজার ৫৩০ টাকা, তাহলে গ্রামাঞ্চলে ১ হাজার ৭৫০ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে খাবার পিছনে খরচ অনেকটাই বেশি। কিন্তু গত দশ বছরে এই অঙ্কটাই লাগামছাড়া হয়ে যাচ্ছে। গ্রামীণ পরিবারগুলি তাদের আয়ের ৪৬ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য কিনতে খরচ করে। শহরের পরিবারগুলির ক্ষেত্রে এই হার ৩৯ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান সামনে আসা মাত্রই ফের তৎপরতা শুরু হয়েছে সরকারের অন্দরে। দফায় দফায় বৈঠক চলছে—কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় খাদ্যপণ্যের দাম। খাদ্য, কৃষি এবং বাণিজ্য মন্ত্রকে নিয়ে লাগাতার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।

তারই মধ্যে সরকারের স্নায়ুচাপ বাড়িয়েছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। চাষে ঘাটতি হলে উৎপাদন কম হবে। ফলে দাম আরও বাড়বে। লোকসভা ভোটের মুখে এই পরিস্থিতি বিজেপিকে বিস্তর চাপে ফেলেছে। সরকারি হিসেবই যেখানে বলছে, ইউপিএ জমানার তুলনায় জনপ্রতি খরচ বেড়েছে ১৫০ শতাংশের বেশি, সেখানে ‘মূল্যবৃদ্ধি উধাও’য়ের স্লোগান জনমানসে অন্তত আর চলবে না। সমীক্ষায় সাফ দেখা যাচ্ছে, মোদী জমানায় দুধ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, তাজা ফল, ড্রাই ফ্রুটস, প্যাকেটজাত খাবারের দাম বেড়েছে বহুগুণে। এছাড়াও পান, তামাক, প্রসাধন, পরিবহণ, চিকিৎসা, ঘর ভাড়া, মোবাইলের টকটাইম, ইন্টারনেট পরিষেবাও লাগামছাড়া।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#price hike, #PM Modi, #inflation, #self promotion, #Narendra Modi, #bjp

আরো দেখুন