ওষুধেও মোদী সরকারের বঞ্চনা? জীবন-মৃত্যুর সঙ্কটে বাংলার লক্ষাধিক টিবি রোগী
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নানান ক্ষেত্রে বাংলার প্রতি বৈমাত্রেয় আচরণের অভিযোগ ওঠে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। এবার টিবির ওষুধ নিয়েও মোদী সরকারের (Modi Govt) বিরুদ্ধে বাংলার প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ উঠছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সেন্ট্রাল টিবি ডিভিশন পাঠায় ওষুধ। কিন্তু বন্ধ হওয়ার মুখে সেই ওষুধ পাঠানো, প্রায় ছ’মাস যাবৎ এমন পরিস্থিতি চলছে। বাংলার যক্ষ্মারোগীদের প্রাণ সংশয় হওয়ার উপক্রম।
বাংলার প্রায় ১ লক্ষ ২ হাজার যক্ষ্মারোগী চার ধরনের ওষুধ পান। অধিকাংশই ড্রাগ সেনসেটিভ টিবি রোগী, সরকার নির্ধারিত যক্ষ্মার ওষুধ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খেলে তাঁরা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান। ১-২ শতাংশ হলেন ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি রোগী, অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ ও ইঞ্জেকশন দিলে তবেই তাঁদের রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
বাংলার স্বাস্থ্যকর্তাদের অভিযোগ, চূড়ান্ত অনিয়মিতভাবে মোদী সরকার সাধারণ টিবিরোগীদের (TB patients) ওষুধ পাঠাচ্ছে। ফলে সাধারণ যক্ষ্মারোগীরা ক্রমেই ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্ণারোগীতে পরিণত হচ্ছেন। এরকম চলতে থাকলে, একজন টিবি রোগী বছরে গড়ে ৮ থেকে ১০ জন মানুষকে সংক্রামিত করবেন। রোগ বাড়বে। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতকে যক্ষ্মামুক্ত করার প্রচার করছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। অথচ তাঁর সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রকই জীবনদায়ী ওষুধ সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে পারছে না!
জানা গিয়েছে, ড্রাগ সেনসেটিভ যক্ষ্মারোগীদের এখন ছ’মাসের ওষুধ খেতে হয়। ওষুধ মূলত চারটি, সেগুলি হল আইসোনাজাইড, রিফমপিসিন, ইথামবুটল এবং প্যারাজিনামাইট। চারটি ওষুধের সবক’টির এখন তুঙ্গে চাহিদা, কিন্তু জোগান নেই। ফলে সমস্যায় জেরবার স্বাস্থ্যদপ্তর।
জানা গিয়েছে, বিপদ ঠেকাতে রাজ্য স্থানীয়ভাবে ওষুধ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে বহুজাতিক সংস্থা বেশিরভাগ যক্ষ্মার ওষুধ নির্মাতা, তার প্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলায় জেলায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা কথা বলেছেন। ওষুধ পাঠাতেও বলছেন। ওষুধ নির্মাতা জানিয়ে দিয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরগুলি এখন ওষুধের দোকান থেকে টিবির ওষুধ কেনা শুরু করেছে। পরিস্থিতি সামলানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে রাজ্য। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সেন্ট্রাল টিবি ডিভিশন অনিয়মিতভাবে ওষুধ পাঠানোয় সমস্যা হচ্ছে। তাই রাজ্য ওষুধ কিনে রোগীদের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছেন।