দেশ বিভাগে ফিরে যান

মূল্যবৃদ্ধির ছেঁকায় ভোট-বিমুখ জনগণ? বাকি পাঁচ দফার আগে সিঁদুরে মেঘ দেখছে মোদী সরকার

April 29, 2024 | 2 min read

মূল্যবৃদ্ধির ছেঁকায় ভোট-বিমুখ জনগণ?

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: দু’দফার ভোট হয়ে গেছে। এদিকে কোথায় যেন বডি ল্যাংগুয়েজে বদল এসেছে বিজেপির।৪০০-পার-এর স্লোগানে যেন অতটা জোর নেই। মোদীর ভাষণে ফিরে এসেছে ধর্মীয় মেরুকরণের উল্লেখ। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি যে ভারতীয় অর্থনীতির কাছে সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা, তা দিনকয়েক আগেই ফের স্পষ্ট করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। আর এই মাথাব্যথা যে গেরুয়া শিবিরের রাজনীতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, তা দেখা যাচ্ছে ভোটপর্বের মাঝে। গত বছরের হিসেব ধরলেই দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে দাম বেড়েছে ১.৫৯ থেকে ৫৮.২৫ শতাংশ। আর এই উদ্বেগজনক তথ্য জানা গিয়েছে মোদী সরকারের আন্তঃমন্ত্রক বৈঠকের নোট থেকেই।

লোকসভা নির্বাচন পর্বে মাত্র দু’দফা মেটার পর দেখা যাচ্ছে দু’টিতেই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে ভোটদানের হার। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের আত্মবিশ্বাস বেসুরো ঠেকছে প্রচারে । দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে, জনমত কতটা তাদের পক্ষে। পাশাপাশি খাদ্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। গম, আটা, চিনি, দুধ, ডাল, আলু, টম্যাটো, পেঁয়াজ—সাধারণ মানুষের খাদ্যসামগ্রীর দাম গত এক সপ্তাহে লাফিয়ে বেড়েছে। মোদী সরকারের তাতেই কপালে ভাঁজ বাড়ছে। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রককে এ ব্যাপারে বাড়তি উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছে পিএমও। সেই মতো কৃষি, খাদ্য, গণবণ্টন, বিদেশ, প্রাণীসম্পদের মতো মন্ত্রক নিজেদের মধ্যে ঘনঘন বৈঠকে বসছে। কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিব সঞ্জীব চোপড়ার সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রক বৈঠকে দাম কমানোর দিশা খুঁজছেন ২৩ জন আধিকারিক।

এ পর্যন্ত দু’দফায় ভোট হয়েছে মাত্র ১৯০ আসনে। আগামী পাঁচ দফায় হবে ৩৫৩ আসনের ভাগ্য পরীক্ষা। সাধারণ মানুষের রান্নাঘরে যদি নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, তার প্রভাব ভোটের বাক্সে পড়বেই, ইটা বলাই বাহুল্য। তাই কীভাবে অন্তত একটা মাস নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে রাখা যায়, সেই উত্তরই খুঁজছে পিএমও।

রিভিউ বৈঠকে উঠে এসেছে, ‘ভারত’ ব্র্যান্ডের আটা, চাল, ছোলার ডাল সস্তায় সরবরাহ করেও কাজে দিচ্ছে না বলে। বিক্রির জন্য ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন ‘ভারত আটা’ বরাদ্দ করা হলেও ৮.৯৫ লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি বিকোয়নি। একই হাল ‘ভারত চালে’রও। ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন বরাদ্দ হলেও বিক্রি হয়েছে স্রেফ ৫.১৮ লক্ষ মেট্রিক টন। কেন্দ্রের যুক্তি, বিক্রি হলেও এই সব খাদ্যপণ্যের প্রচার ঠিকমতো হচ্ছে না। দেশের ৫১ শতাংশ মানুষ ভারত আটা, বা চাল-ডালের কথা জানেই না। তাই টিভি, রেডিওতে প্রচার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভারত ব্র্যান্ডের অতিরিক্ত ১০ লক্ষ মেট্রিক টন আটা এবং ১১.৩ লক্ষ মেট্রিক টন চাল বিক্রির জন্য ‘প্রাইস স্টেবিলাইজেশন ফান্ড’ থেকে ১ হাজার ১৯৬ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকাও বরাদ্দ হচ্ছে। অর্থাৎ মোদি সরকার মনে করছে, এভাবেই ৩০ জুন পর্যন্ত দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

অর্থনৈতিক মহল মনে করছে, শুধু ভারত ব্র্যান্ড দিয়ে গোটা দেশের খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানা সম্ভব নয়। সামগ্রিকভাবে খাদ্যসামগ্রীর দামের দিকে নজর দিতে হবে সরকারকে। দেশবাসীর মাথাপিছু আয়ও একটা বড় ফ্যাক্টর। কারণ, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কিছুতেই আম জনতার উপার্জন বাড়ছে না। তাই অশনি সঙ্কেত নরেন্দ্র মোদির। ভোট বাকি আরও পাঁচ দফা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Loksabha Election 2024, #food price rise, #price hike, #votes, #inflation, #modi govt

আরো দেখুন