লোকসভা ভোটের আবহে মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে মোদীর বক্তব্যে বিতর্ক
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: লোকসভা ভোটের আবহে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে যা বললেন, তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মোদী বলেন, আশির দশকে রিচার্ড অ্যাটেনবরোর ‘গান্ধী’ সিনেমা আসার আগে পর্যন্ত মহাত্মা গান্ধীর কার্যকলাপ সম্পর্কে বিশ্ববাসী অবহিত ছিলেন না! মোদীর এই মন্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় মঙ্গলবার থেকেই ভাইরাল। শুধু কংগ্রেস বা বিরোধী শিবির নয়, আম জনতাও মুণ্ডপাত শুরু করেছে বিজেপির পোস্টার বয়ের। কেউ বলছেন, ‘বয়স হয়ে গিয়েছে।’ কারও কটাক্ষ, ‘হারের ভয়ে মরিয়া’। কেউ আবার সাফাই দিয়েছেন, ‘মোদীজি আসলে মহাত্মা গান্ধীর ব্র্যান্ডিংয়ের কথা বলতে চেয়েছেন’। কিন্তু সত্যিটা হল, তাঁর ভোটাররা সেটা বোঝেননি। আর বিরোধীরাও এই মন্তব্যে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছে। তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল কংগ্রেসও।
মোদীর সেই মন্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এক্স হ্যান্ডলে পোস্টে রাহুল লিখেছেন, ‘‘মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে জানতে শুধুমাত্র ‘সম্পূর্ণ রাষ্ট্রবিজ্ঞান’-এর এক জন পড়ুয়াকে ছবিটি দেখতে হবে।’’ এই মন্তব্যের মাধ্যমে রাহুল বুধবার মোদীর স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন।
বিরোধীরা তোপ দেগেছে, বিদেশ থেকে যে অসহযোগ আন্দোলনের সূত্রপাত, তার কাণ্ডারীকে গোটা বিশ্ব চিনত না? কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘জানি না প্রধানমন্ত্রী কোন বিশ্বে রয়েছেন, যেখানে ১৯৮২ সালের আগে মহাত্মা গান্ধীকে কেউ চিনত না! বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারই বরং বারাণসী, দিল্লি, আমেদাবাদে গান্ধীবাদী প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করেছে। আরএসএস কর্মীরা গান্ধীর জাতীয়তাবাদকে বোঝেন না। এটাই তাঁদের হলমার্ক। তাঁদের মতাদর্শের কারণে সৃষ্ট পরিবেশের প্রভাবেই নাথুরাম গডসে খুন করেছিল গান্ধীজিকে। ২০২৪ সালের এই লোকসভা নির্বাচন গান্ধী অনুগামী বনাম গডসে অনুগামীদের লড়াই। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর গডসে অনুগামী সহকর্মীদের পরাজয় নিশ্চিত।’ তাঁর আক্রমণ, ‘মহাত্মা গান্ধীর পরম্পরা যদি কেউ ধ্বংস করে থাকেন, তাহলে তিনি স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী।