নিট পরীক্ষা রাজ্যের কাছে ফেরানোর দাবি তুললেন মমতা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ডাক্তারির সর্বভারতীয় পরীক্ষা কেন্দ্রের হাতে যাওয়ার পর ২০১৩ সালে প্রথমবার নিট হয়। তার আগে বাংলায় এই মেধা যাচাই করত ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজামিনেশন বোর্ড। নানা জটিলতায় ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে নিট হয়নি। ২০১৬ সালে বাংলা সহ কিছু রাজ্য আগের মতো নিজেরাই পরীক্ষা নিয়েছিল।
২০১৭ থেকে নিট পুরোপুরি কেন্দ্রের হাতে চলে যায়। বাংলা, তামিলনাড়ু সহ বহু রাজ্য প্রতিবাদ জানাতে থাকে। মাধ্যম পাল্টানোয় বহু মেধাবী ছাত্রছাত্রী খারাপ ফল করেন। আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটে। একাধিক মামলা হয়। রাজ্যের হাতে পরীক্ষার দায়িত্ব ফেরানোর দাবিতে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আঞ্চলিক ভাষায় প্রশ্নপত্রের দাবিতে কড়া চিঠিও লেখেন। তাঁর চাপে বাংলা সহ আঞ্চলিক ভাষায় প্রশ্নপত্র চালু হলেও, রাজ্যগুলিকে নিট ফেরায়নি কেন্দ্র। বরং পরীক্ষার আয়োজনে সিবিএসই বোর্ডের দাপট বাড়তে থাকে।
ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রশ্ন তুলতে থাকেন, এ কেমন মেধা যাচাই, যেখানে পাশের হার ৫০ শতাংশের বেশি? এ কেমনই বা মেধাপরীক্ষা, যেখানে পার্সেন্টাইলকে ঢাল করে ১৬-১৯ শতাংশ নম্বর পেয়েও দিব্যি ‘কোয়ালিফাই’ করা যায়! অভিযোগ ওঠে, নিট আসলে স্বাস্থ্যশিক্ষার নামে কয়েক লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা চালু রাখার আইনি রক্ষাকবচ। ফি বছর ভুয়ো পরীক্ষার্থী এবং হোটেলে রেখে পরীক্ষার্থীদের পাশ করানোর সিন্ডিকেটও ফুলেফেঁপে ওঠে। চলতি বছরে একঝাঁক পরীক্ষার্থীর একই নম্বর প্রাপ্তির বিষয়টি থেকেই দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে।
এবার নিট দুর্নীতি নিয়ে ‘ঘনিষ্ঠ মহলে’ বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘ডাক্তারির আসন মোটা টাকায় বিক্রি করতেই নিট কুক্ষিগত করেছে কেন্দ্র। আগে রাজ্যগুলিই এই পরীক্ষা নিত। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা হয়েছে। কেন্দ্র হাতে নেওয়ার পর লক্ষ লক্ষ টাকায় সিট বিক্রির চক্রান্ত শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র এই পরীক্ষা হাতে নিতেই বাংলা তথা বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার ছাত্রছাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। গ্রামের ছেলেমেয়েরা বিপদে পড়েছেন। ২৫-৩০ লক্ষ টাকা খরচ করে আমরা ডাক্তার তৈরি করছি, অথচ তারা চলে যাচ্ছে ভিন রাজ্যে’। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘এই পরীক্ষা রাজ্যের কাছেই ফেরাতে হবে।’