সংসদের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব নিয়ে মুখে কুলুপ রাষ্ট্রপতির
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শুরু হয়েছে আঠারোতম লোকসভার অধিবেশন। বৃহস্পতিবার সংসদের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে নিট দুর্নীতির কথা কার্যত স্বীকার করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। কিন্তু আম জনতার দুই জ্বলন্ত সমস্যা মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব নিয়ে নীরব থাকলেন দেশের সাংবিধানিক প্রধান। কেন্দ্র সরকারের তৈরি করে দেওয়া বক্তৃতায় ওই দুই শব্দের উল্লেখই ছিল না। মণিপুরের কথাও উচ্চারণ করলেন না দেশের রাষ্ট্রপতি। উত্তর-পূর্ব ভারতে শান্তি আনতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেই ইতি টানলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি এদিন লোকসভা কক্ষে প্রশ্ন ফাঁসের কথা বলতেই ‘নিট’, ‘নিট’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন বিরোধীরা। বিরোধী স্বরের নেতৃত্ব ছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিএমকের দয়ানিধি মারান চিৎকার করে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে ইস্তফা দিতে বলুন। দ্রৌপদী মুর্মু বলে যান রাজনৈতিক দলাদলির ঊর্ধ্বে উঠে এ বিষয়ের সমাধানের দিকে এগতে হবে। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা প্রথম নয়, অনেক রাজ্যে আগে ঘটেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, তাঁর সরকার এ ব্যাপারে কড়া আইন এনেছে। পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান, পরীক্ষা প্রক্রিয়ার সংস্কারের ব্যাপারেও উদ্যোগী হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস ইস্যুতে তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। রাষ্ট্রপতির অভিভাষণ চলাকালীন দফায় দফায় প্রতিবাদে সরব হন বিরোধী সদস্যরা। রাষ্ট্রপতির ভাষণে একবারের জন্যও মণিপুর, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের ইস্যু না থাকায় এককাট্টা বিরোধীরা।
কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল থেকে চন্দ্রযান; গত ১০ বছরে সরকার কী কী করেছে, সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। ৫১ মিনিটের বক্তৃতায় একবারও মোদীর নাম নেননি তিনি। সাধারণ মানুষের জ্বলন্ত ইস্যুগুলির একটিও তিনি উল্লেখ না করায় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, বড্ড ক্লিশে ছিল বক্তৃতা। সরকারের জমুলার কথা তো গত ১০ বছর ধরে শোনা হচ্ছে। এদিনও নতুন কিছু শোনা হল না। বেকারত্ব, বাংলার রেল দুর্ঘটনা, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব নিয়ে একটি শব্দও শোনা গেল না। বড়ই দুভার্গ্যজনক। সমালোচনা করেছেন খাড়্গেও।
আজ, শুক্রবার সংসদে রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের উপর ধন্যবাদজ্ঞাপনের আলোচনা শুরু। দেশের জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে চর্চার দাবিতে এনডিএর চাপ বাড়াবে বিরোধীরা। আজ ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা, সংসদের উভয় কক্ষে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় মুলতুবি প্রস্তাবের নোটিশ দিতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। নিটের প্রশ্ন ফাঁস ইস্যু নিয়ে আলোচনার দাবি জানানো হবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদলগুলি কৌশল ঠিকের জন্য বৈঠক করে। রাহুল ও খাড়্গের সভাপতিত্বে বৈঠকে হাজির ছিলেন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং কাকলি ঘোষদস্তিদার। আগামী সোমবার অবধি প্রতিবাদ চলবে বলে ঠিক করেছেন বিরোধীরা।