দেশ বিভাগে ফিরে যান

লাগাতার বৃষ্টিটে ধস, এখনও বন্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক

July 4, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বর্ষা আসতেই প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে। ফলে তিস্তার অবস্থা বিপজ্জনক। ধস নেমে বিপর্যস্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। লাগাতার বৃষ্টিতে সিকিমের পাশাপাশি দার্জিলিং পাহাড়েও মঙ্গলবার একাধিক জায়গায় ধস নামে। বিড়িকধারা, গেইলখোলায় ধস নামায় ঝুঁকি এড়াতে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখে প্রশাসন।

বুধবার নতুন করে ধস না নামলেও সংশ্লিষ্ট রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করেনি। তিস্তা নদী সংলগ্ন এই রাস্তার প্রায় ৩৫ কিমি অংশ বিপজ্জনক। একইসঙ্গে দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কও বিধ্বস্ত। সংশ্লিষ্ট দু’টি রাস্তার এমন হাল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পর্যটন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমেছে দুই জেলা প্রশাসন। পাহাড় ও সমতলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বাঁচাতে আন্দোলনের ডাক দিল হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “রাজ্যের পূর্ত দপ্তর না কেন্দ্রের এনএইচআইডিসিএল, কে রাস্তা তৈরি করবে তা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। আমরা শুধু চাই ১০ নম্বর জাতীয় সড়কটি সচল থাকুক। তিস্তার আগের রূপ ফিরিয়ে আনা হোক। নদী বাঁচলে রাস্তাও বাঁচবে।”

এদিন সিকিমের মল্লিবাজারে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগকারী রাস্তার একাংশ ধসে গিয়েছে। কিন্তু, কালিম্পংয়ে নতুন করে ধস নামার খবর নেই। কিছু জায়গায় তিস্তার জলস্তরের উচ্চতা ১০ নম্বর সড়কের সমান। ফলে সংশ্লিষ্ট সড়কের বিপজ্জনক কিছু অংশ সেভাবে মেরামত করা যায়নি। এনিয়ে টানা চারদিন কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেভক করোনেশন সেতু থেকে সিকিম সীমান্তের রংপো পর্যন্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের অংশ কালিম্পং জেলার অধীনে। এই অংশ প্রায় ৫২ কিমি লম্বা। বিরিকধারা থেকে রম্ভি বাজার পর্যন্ত ১৭ কিমির মধ্যে ঝোরা থাকলেও তিস্তা নদী নেই। রাস্তাটির এই অংশ কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। রাস্তার বাকি ৩৫ কিমি অংশ বিপজ্জনক। এই এলাকায় শ্বেতীঝোরা, ভিউপয়েন্ট, ২৯ মাইল, মল্লি, লিকুভির অবস্থিত। এখানে রাস্তার গা ঘেঁষে তিস্তা। নতুন করে ধস না হলেও মল্লিতে নদী ভাঙন হচ্ছে। লিকুভিরে মাঝেমধ্যে পাথর নেমে পড়ছে রাস্তায়।

নদীর জলস্তরের উচ্চতা অস্বাভাবিক থাকায় ভিউপয়েন্টে রাস্তা মেরামত করা সম্ভব হয়নি। পূর্তদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা জানান, সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলির মধ্যে কয়েকটি এলাকায় পাহাড় কেটে রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে। তবে স্রোত ও জলস্তরের উচ্চতা অস্বাভাবিক থাকায় নদীতে নেমে ভাঙন রোধের কাজ করা যাচ্ছে না। সেসব জায়গায় রাস্তা মেরামত কাজ চলছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, চিত্রে থেকে শ্বেতীঝোরা পর্যন্ত জাতীয় সড়কে সমস্ত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে। রংপো থেকে ১৭ মাইল, আলগাড়া, লাভা, গোরুবাথান হয়ে শিলিগুড়িতে যাতায়াত করছে ছোট গাড়ি। কালিম্পং থেকে রেলি, সামথারা, পানবু হয়ে শিলিগুড়িতে যাতায়াত করবে ছোট গাড়ি। পণ্যবোঝাই লরি, বাস সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঋষি, পেডং, আলগাড়া, লাভা, গোরুবাথান হয়ে শিলিগুড়িতে যাতায়াত করবে। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুহ্মণ্যম টি বলেন, পূর্তদপ্তর কাজ করলেও জাতীয় সড়ক এখন স্বাভাবিক হয়নি। যাত্রী সুরক্ষায় বিকল্প রাস্তাগুলি দিয়ে যানবাহন চালানো হচ্ছে।

ধসের কারণে ৭১৭এ জাতীয় সড়ক সামায়িকভাবে বন্ধ। মেরামতি কাজের জন্য রবিঝোরা থেকে তিস্তাবাজার যাওয়ার রাস্তা বন্ধ। বৃষ্টির জেরে পেডং থেকে তাদে যাওয়ার রাস্তায় ঋষি নদীর উপর মুদুং সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোরুবাথানের ফাগুখোলা ঝোরায় পাথর সরিয়ে রাস্তা সমান করার কাজ চলছে। সেখানে সেতুর প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Sikkim, #National Highway 10

আরো দেখুন