ভারতে সাইবার প্রতারণার ছক কষছে পাকিস্তান?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ভারতে সাইবার প্রতারণার ছক কষছে পাকিস্তান? সাম্প্রতিক একটি ঘটনার পর এরকমই প্রশ্ন উঠছে। ‘আপনার ছেলে ধর্ষণ করেছে! সেই অভিযোগে মুম্বই পুলিস ওকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিভাবক হিসেবে পুলিসের তরফে আপনাদের আগাম জানানো হল। ছেলের জামিন করাতে হলে আইনজীবীর খরচ বাবদ এখনই তিন লক্ষ টাকা পাঠান।’— কাঁধে আইপিএস ব্যাজ, সঙ্গে আবার তিনটি স্টার। পরনে খাঁকি উর্দি। অজ্ঞাত ফোন নম্বর থেকে আসা একটি ভিডিও কলে রয়েছেন মুম্বই পুলিসের এক ‘সিনিয়র পুলিস আধিকারিক’। ওই ভিডিও কল দেখে প্রথমে ঘাবড়ে যান কলকাতার টালিগঞ্জের এক বাসিন্দা।
প্রৌঢ়ের বুঝতে অসুবিধা হয়নি, গোটা ব্যাপারটাই ঘটিয়েছে সাইবার প্রতারকরা। তাঁর টাকা গচ্চা না গেলেও গোটা বিষয়টি তিনি জানিয়ে রাখেন কলকাতা পুলিসকে। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, যে নম্বর থেকে ওই ভিডিও কল এসেছিল, সেটি ভারতের নয়। আইএসডি কোড বলছে, সেটি পাকিস্তানের। কারণ নম্বরটি শুরু হচ্ছে ‘+৯২’ দিয়ে।
বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই নজরে রাখছে লালবাজার। যদিও বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, উন্নত প্রযুক্তির যুগে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে বসেই পাকিস্তানের নম্বর ব্যবহার করা সম্ভব। কলকাতা পুলিস সূত্রে খবর, পুলিস সেজে ভিডিও কল করে কেস দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের প্রবণতা এখন বেড়েছে। তবে এই ছকে সাইবার প্রতারকরা যে খুব একটা সফল, তা নয়। যাঁরা এদের খপ্পরে পড়েছেন, তাঁদের কমবেশি পাঁচ লক্ষ টাকা গায়েব হয়েছে। বড় অঙ্কের দাঁও মারছে প্রতারকরা। প্রতারণার এই ট্রেন্ড রুখতে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া ও রাস্তার ডিসপ্লে বোর্ডে সচেতনতা প্রচারে নেমেছে লালবাজার। তবে যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, সেইসব ঘটনার তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ সাইবার বিভাগের পুলিসের। সূত্রের দাবি, ১০টি প্রতারণার অভিযোগের মধ্যে অন্তত আটটি ক্ষেত্রেই পাকিস্তানের আইএসডি কোড ব্যবহার করেছে প্রতারকরা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই ফোনের অবস্থান দেখাচ্ছে পাকিস্তান। প্রতিবেশী দেশের কোনও বিশেষ এলাকা থেকে এধরনের ফোন আসছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এসব সংগঠিত প্রতারণার ছক কি না, তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিস।