পুজো স্পেশাল বিভাগে ফিরে যান

দুর্গার রোষে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন ভয়ঙ্কর রঘু ডাকাত, কোথায় জানেন?

September 15, 2024 | 2 min read

দুর্গার রোষে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন ভয়ঙ্কর রঘু ডাকাত, কোথায় জানেন? ছবি সৌজন্যে: বর্তমান

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আগরপাড়ার বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজোকে ঘিরে ছড়িয়ে আছে হাজারো মিথ। শোনা যায় এখানে ডাকাতি করতে এসে দেবী দুর্গার রোষে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন ভয়ঙ্কর রঘু ডাকাত। জ্ঞান ফেরার পর বলেন, ‘ছাতাপড়া বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে আর কোনওদিন ডাকাতি করতে আসব না।’

আবার শোনা যায়, দেবী একদিকে রাগী অন্যদিকে করুণাময়ী। অষ্টমীতে পুজো করছেন ব্রাহ্মণ। তিনি খর্বাকৃতির মানুষ। দুর্গার মাথা পর্যন্ত হাত পৌঁছচ্ছিল না। ফলে মালা পরাতে পারছিলেন না। সেদিন মালা নিতে নিজেই মাথা নিচু করেছিলেন দুর্গা। পশু বলি হতো পুজোয়। বলির মোষ নিজেই খুঁজে এনেছিলেন জগৎজননী।

এ বাড়ির পুজোর ভোগেও অভিনবত্ব। দেশি কই। সরষে ইলিস। চিংড়ি মালাইকারি। রুই মাছের কালিয়া খেতে দিতে হয় দেবীকে। তিন বেলা থাকে ভূরিভোজের আয়োজন। দশমীর বিদায় বেলায় পান্তা ভাত ও ইলিস ভাজা খান দেবী। তারপর লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনির মশলা দিয়ে বানাতে হয় স্পেশাল পান। তা খেয়ে ‘পরের বছর আসব’ বলে আশ্বাস দিয়ে রওনা দেন দুর্গা।

আরও পড়ুন: গঙ্গার পাড়ে সবুজ গাছগাছালিতে ভরা লোচন ঘোষের শিবমন্দির


ঢাকা বিক্রমপুরের সংস্কৃত পণ্ডিত রামশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি বছর পানিহাটিতে আসতেন গঙ্গা স্নান করতে। কলকাতার এক জমিদার সন্তোষ রায় নিজের মেয়ে হরিপ্রিয়ার সঙ্গে রামশঙ্করের বিবাহ দেন। শ্বশুরবাড়ির সহযোগিতায় জমিদারি পত্তন করেন রামশঙ্করবাবু। একদিন হরিপ্রিয়াদেবী স্বপ্নে দুর্গার নির্দেশ পান। তারপর ১৭৮৩ খ্রীষ্টাব্দে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। সে পুজোর আভিজাত্য এখনও অটুট। তবে ১৯৯৫ সালে বন্ধ হয় মোষ বলি। ২০২২ সালে পাঁঠা বলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পরিবারের সদস্যরা জানালেন, মহালয়ার পরদিন অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে দুর্গা দালানে শুরু হয় চণ্ডীপাঠ। ষষ্ঠীতে ঘট উত্তোলন থেকে শুরু হয় আরাধনা। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে দুর্গাকে দেওয়া হয় আমিষ ভোগ। সকালে মাসকলাই ও গোবিন্দ ভোগ চালের খিচুড়ি, আলু, বেগুন, পটল, ঢেঁড়শ, কুমড়ো, লাল শাক, নারকেল ভাজা ইত্যাদি। এ ছাড়াও ইলিস সহ নানা ধরনের মাছ ভাজা। সপ্তমীর সকালে খিচুড়ি। দুপুরের ভোগে সাদা ভাত, লাউ চিংড়ি ও নানা ধরনের সব্জি ও মাছের একাধিক পদ, চাটনি, পায়েস। রাতে সাদা ভাত ও বিভিন্ন তরিতরকারি ও মাছ। অষ্টমী ও নবমীতে সব্জি ও মাছের পদ অপরিবর্তিত থাকে। তবে অষ্টমীর স্পেশাল হিসেবে থাকে তেল কই, কচুশাক ও এঁচোড়। নবমীর রাতের রান্না তুলে রাখা হয় দশমীর জন্য। ওই পান্তা ভাত দুর্গার ভোগে অর্পণ করার রীতি। পুরুষরা দেবীকে কাঁধে তুলে নিয়ে যান গঙ্গার ঘাটে। দেবীর মুখশুদ্ধিতে থাকে স্পেশাল পান।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga Pujo, #durga puja, #Agarpara, #Raghu Dakat, #Bandhopadhyay Bari

আরো দেখুন