হাওড়ায় বনেদি বাড়ির পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম মাকড়দহের শ্রীমানী বাড়ির পুজো
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হুগলি পাড়ের প্রাচীন শহর হাওড়ায় বনেদি বাড়ির পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম মাকড়দহের শ্রীমানী বাড়ির পুজো। ১০৬ বছরের ঐতিহ্য সে পুজোর শরীরে লেগে। মধ্য হাওড়ার মাকড়দহ এলাকার চিনির ব্যবসায়ী কেদারনাথ শ্রীমানী উৎকৃষ্ট ঘিয়ের কারবারি হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
হাওড়া ব্রিজ তখনও ভবিষ্যতের গর্ভে। দুর্গাপুজোর মাস দু’য়েক আগের এক ভোরে কেদারনাথের জেষ্ঠ পুত্র বিশ্বনাথ শ্রীমানীর স্ত্রী বাড়ির দালানে জল ছড়াচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখেন, দরজার সামনে হর-গৌরির একটি কাঠামো রাখা রয়েছে। কিন্তু কাকভোর। কোথাও জনমনিষ্যি নেই। কে রাখল দেব কাঠামো? বিস্মিত হলেন বাড়ির বউ। সে কাঠামো বাড়ির ভিতরে নিয়ে আসা হল। মূর্তি তৈরি হল। শুরু হল পুজো।
হুগলি পাড়ের প্রাচীন শহর হাওড়ায় বনেদি বাড়ির পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম মাকড়দহের শ্রীমানী বাড়ির পুজো। ১০৬ বছরের ঐতিহ্য সে পুজোর শরীরে লেগে। সাবেক রীতি মেনেই দেবীর আরাধনা হয়। দুর্গা এখানে দশভূজা নন। এখানে তিনি সপরিবারে আসেন। পুজো হয় হর-গৌরি রূপের। একচালার মূর্তি। ডাকের সাজ। মহাদেবের পাশে বসে সরস্বতী, লক্ষ্মী, গণেশ ও কার্তিক। এ বাড়িতে বলি প্রথা নেই। দুর্গাকে এক মণ চালের নৈবেদ্য ভোগ হিসেবে দেওয়ার নিয়ম। সঙ্গে থাকে নারকোলের তৈরি বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি। থাকে ফল। অষ্টমীতে একজন কুমারী ও একজন সধবাকে দেবী রূপে পুজো করার রীতি রয়েছে শ্রীমানীদের।
প্রতি বছর জন্মাষ্টমীতে বাঁশপুজো করে শুরু হয় কাঠামো তৈরি। ষষ্ঠী থেকে দশমী গোটা বাড়ি গমগম করে শতাধিক আত্মীয়-স্বজনের ভিড়ে। কেউ আসেন সানফ্রান্সিসকো থেকে। কেউ লন্ডন থেকে এসে যোগ দেন বাড়ির পুজোয়। পরিবারের সদস্যরা পালা করে বহন করেন পুজোর ব্যয়ভার।