পুজো স্পেশাল বিভাগে ফিরে যান

বধূ সেজে এসে শাঁখারির থেকে শাঁখা পরেছিলেন দেবী দুর্গা, পরে স্বপ্নাদেশে শুরু হয় পুজো‍

October 2, 2024 | 2 min read

—প্রতীকী ছবি

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: অবিভক্ত বাংলা দেশের চট্টোপাধ্যায় পরিবারের গোপীনাথ চট্টোপাধ্যায় বাঁকুড়া জেলায় আসেন প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে। সেখানে থেকে তিনি বর্ধমান জেলায় এসে বর্তমান দুর্গাপুরে বসবাস শুরু করেন। বর্ধমানের রাজা বিজয়চাঁদ মহতাবের কাছ থেকে তিনি জায়গীর পেয়েছিলেন। সেই সময় ১৯টি মৌজা নিয়ে গোপীনাথবাবুর নামে সেই মৌজার নাম হয় লাটে গোপীনাথপুর। তাঁর দুই পুত্র সন্তান দুর্গাচরণ ও নন্দদুলাল চট্টোপাধ্যায়। দুর্গাচরণের নাম অনুসারে পরবর্তীকালে দুর্গাপুর নামকরণ হয়।

গোপীনাথবাবুর একাদশতম প্রজন্মের সদস্য মানিক চট্টোপাধ্যায় ও সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, দুর্গাপুরের ইতিহাস বহন করে চলেছে আমাদের আদি বাড়িঘরগুলি। সেগুলি ভগ্নদশায় পড়ে রয়েছে। বহু ঐতিহাসিক স্থাপত্য ভেঙে ভেঙে পড়ছে। চট্টোপাধ্যায় পরিবারে একসময় একটিই দুর্গাপুজো হতো। পরবর্তীকালে প্রায় তিনশো বছর আগে দু’টি পুজো শুরু হয়। কোনও পারিবারিক বিবাদের কারণেও হতে পারে।

কথিত আছে, আমাদের পুরনো বাড়ির পাশে একটি পুকুর আছে। ওই পুকুরের পাড়ে এক নববধূ বসেছিলেন। সেই সময় গ্রামে একজন শাঁখারি শাঁখা বিক্রি করতে এসেছিলেন। ওই নববধূ তাঁর কাছ থেকে শাঁখা পরেন। শাঁখার মূল্য দিতে গিয়ে নববধূ নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি জমিদার বাড়ির মেয়ে। ওই বাড়ির মন্দিরের কুলুঙ্গিতে টাকা রাখা রয়েছে। শাঁখারি তাঁর কথা মত বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন চট্টোপাধ্যায় পরিবারে নববধূ বা কোনও মেয়ে নেই। শাঁখারিকে মিথ্যাবাদী অপবাদ নিয়ে শাস্তি গ্রহণ করতে হয় চাবুকের আঘাত খেয়ে। ওই দিন রাতে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের একজন সদস্যকে স্বপ্নাদেশ দেন যে, ওই বাড়িতে অধিষ্ঠিত হতে চান দেবীদুর্গা। পরদিন সকালে কুলুঙ্গিতে দেখেন একটি ষোলো আনা ও শাঁখা-সিঁদুর পড়ে রয়েছে। এরপর ওই শাঁখারির খোঁজ করে তাঁকে ষোলোআনা দেওয়া হয়। শুরু হয় দুর্গাপুজো।

তিনশো বছরের এই পুজোয় এখন আর মহিষ বলি হয় না, বসে না নহবৎ। বনেদিয়ানার সেই জৌলুস কমলেও বর্তমান বংশধরেরা দেবীর পুজো করেন নিষ্ঠার সহিত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga puja, #Burdwan, #Durga Puja 2024, #Chattopadhyay Family

আরো দেখুন