ছ’বোনের পুজো ও বিসর্জন ঘিরে মিলন উৎসবে পরিণত হয় বালুরঘাটের ঘাটকালী
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন জমিদারের পুজো আজও করে আসছে বালুরঘাটের ঘাটকালী সেবা সমিতি। সব জায়গায় বৃহস্পতিবার রাতেই কালীমায়ের পুজো হলেও এখানকার ঘাটকালীর পুজো শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। রাতেই বিসর্জন দেওয়া হবে ঘাটকালীর। তবে পুরনো রীতি অনুযায়ী ঘাটকালীর আশপাশের এলাকায় পূজিত আরও পাঁচ বোনকে ঘাটকালী মন্দির প্রাঙ্গণে আনা হয়। এরপর সকলকেই একত্রে বিসর্জন দেওয়া হয়। এই পুজোকে কেন্দ্র করে বালুরঘাট শহর সংলগ্ন হাজিপুর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসবের আবহ তৈরি হয়।
ঘাটকালী সেবা সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিৎ কর্মকার বলেন, আমাদের এই ঘাটকালী মায়েরা ছ’বোন। মাহিনগড় এলাকার আশপাশেই অন্যান্য বোনেদের পুজো হয়। রাতে সব জায়গা থেকে প্রতিমাগুলি এখানে এসে নিয়ে আসা হয়। তারপর রাতেই বিসর্জন দিয়ে দেওয়া হয়। বহু দূর দূরান্ত থেকে প্রতিবার জাগ্রত এই কালী মায়েদের পুজো দেখতে আসেন। পুজো কমিটির সদস্য আদিত্য আচার্য্য বলেন, ঘাটকালীর পুজোতে ভোগের জন্য বহু মানুষ এসে ভিড় করেন। ঘাটকালীর মাঠে মেলা বসে।
৩০০ বছর আগে বালুরঘাট শহর সংলগ্ন ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জমিদারদের অধীনে ছিল। তৎকালীন সুকুল জমিদার প্রথমে এই পুজো শুরু করেছিলেন। সাত জায়গায় সাত কালী বোনের পুজো দেওয়া হয়। তবে ঘাটকালীই ছিল শেষ বোন। কথিত আছে, একজন পুরোহিতই সব বোনেদের পুজো করতেন। তাই সারারাত বাকি বোনদের পুজো করে ভোরবেলা শুরু হতো ঘাটকালীর পুজো। সেই থেকেই আজও দিনের বেলাতেই পুজো করেন এখানকার ভক্তরা। হাজিপুরের আশপাশে এখনও ছয় বোনের পুজো হয়। ওই এলাকার স্কুল মোড়ে রয়েছে বামাকালী, সেন্ট পিটার্স এলাকায় সুরকালী, মাহিনগড় এলাকায় চণ্ডী কালী, নদীর পাড়ে নির্দয়া কালী, মিশন এলাকায় বুড়াকালী, কৃষি ক্যাম্পে সন্ন্যাস কালী ও হাজিপুরের ঘাটে ঘাটকালী। সকলে মিলে সাত বোন। তবে বর্তমানে সন্ন্যাসকালী মায়ের পুজো আর হয় না। তবে বাকিগুলির পুজো আজও হচ্ছে।