দেবীর নামে গ্রামের নাম, ধাত্রীগ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজো তিন শতাব্দীর সাক্ষী
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: উমা আর কালী চলে গিয়েছেন, এবার হৈমন্তীকার পালা। চারিদিকে সাজ সাজ রব, মা সিংহবাহিনী আসছেন। কালনার ধাত্রীগ্রামে ৩০০ বছরের প্রাচীন জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। নবমী, দশমী দু’দিন পুজো হয় এখানে। নবমীর দিনই সপ্তমী, অষ্টমীর পুজো হয়। স্থানীয়দের একাংশের মতে, জগদ্ধাত্রী মায়ের নাম অনুসারেই এলাকার নাম হয়েছে ধাত্রীগ্রাম।
ধাত্রীগ্রাম বহু প্রাচীন জনপদ। প্রায় ৩০০ বছর আগে চন্দ্রপতি গোষ্ঠী নদীয়া জেলার ব্রহ্মশাসন থেকে এসে ধাত্রীগ্রামে বসবাস শুরু করে। চন্দ্রপতি গোষ্ঠীর পণ্ডিত রামচন্দ্র তর্কসিদ্ধান্ত ছিলেন অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী। ধাত্রীগ্রামে বেশ কিছু সংস্কৃত শিক্ষার টোল গড়ে শিক্ষাদান শুরু করেন তিনি। দূর-দূরান্ত থেকে ছাত্ররা টোলে আসতেন। নবদ্বীপ থেকেও পণ্ডিতরা আসতেন। রামচন্দ্র তর্কসিদ্ধান্তের এক বংশধর স্বপ্নাদেশে জগদ্ধাত্রীর পুজো শুরু করেন। অন্যান্য জগদ্ধাত্রী যেমন সিংহবাহনী। কিন্তু ধাত্রীগ্রামে দেবী নরসিংহ বাহনের উপর অধিষ্ঠিতা।
সেই পারিবারিক জগদ্ধাত্রী পুজোই সর্বজনীন রূপ নিয়েছে। অতীত রীতি মেনে ছাগ বলি প্রথা রয়েছে আজও। ধাত্রীগ্রাম পঞ্চায়েতের অদূরে দেবীর স্থায়ী আটচালা তৈরি হয়েছে। পুজো দু’দিন ধরে চললেও মেলা চলে সাতদিন ধরে। নবমীর আগের দিন গ্রামের মহিলারা দেবীবরণে শামিল হন। সিঁদুর খেলা চলে। আশেপাশের প্রায় ২০-২৫টি গ্রামের মানুষ ভিড় জমান। ধাত্রীগ্রামের বাসিন্দারা এই পুজোর জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন। আলোর রোশনাইয়ে সাজানো হয় এলাকা ও রাস্তা। প্রতি বছর শত শত ভক্ত নাচ পুকুরে স্নান সেরে দণ্ডি কেটে মায়ের পুজো দেন। ধুনো পোড়ানো হয়। ভোর থেকে পুজো দিতে লম্বা লাইন পড়ে।