বাংলা ভাগের তত্ত্ব বুমেরাং হচ্ছে, মনে করছেন বিজেপি সাংসদ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সাম্প্রতিক অতীতে আচমকাই বাংলা ভাগ নিয়ে একাধিক মন্তব্য করছিলেন বঙ্গ বিজেপি সাংসদদের একাংশ। দলের রাজ্যসভার সাংসদ কোচবিহারের বাসিন্দা নগেন্দ্রনাথ রায় (অনন্ত মহারাজ) সরাসরি আলাদা কোচবিহার রাজ্যের দাবি করেছিলেন সংসদ ভবন চত্বরে দাঁড়িয়ে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বঙ্গ বিজেপির আর এক সাংসদ শান্তনু ঠাকুর দিল্লির একটি অনুষ্ঠানে এসে সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, রাজ্যের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় যেভাবে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে, তাতে এই ব্যাপারে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন। আর সেই হস্তক্ষেপের ইস্যুতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ‘পরামর্শ’ ছিল, এহেন জেলাগুলিকে বেছে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ে তোলা হোক। অর্থাৎ, বাংলা ভাগ। তবে বোমা ফাটিয়েছিলেন আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি দাবি করেছিলেন যে, উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের স্বার্থে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে রাজ্যের এই অংশটির জুড়ে যাওয়া প্রয়োজন। যদিও পরে বিজেপি সাফাই দেয় যে, দলের রাজ্য সভাপতি উত্তরবঙ্গ ভাগের কথা বলেননি। উত্তরবঙ্গের উন্নয়নমূলক কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পগুলিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই সংক্রান্ত কর্মসূচির সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন।
ব্যাখ্যা যাই থাকুক না কেন, বিষয়টি নিয়েই যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছে। আর তাতে বিড়ম্বনা বেড়েছে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। রাজ্যের ছ’টি বিধানসভা আসনের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে গো-হারা হয়েছে বিজেপি। আর সেই ভরাডুবির পর এখন বঙ্গভঙ্গের তত্ত্ব নিয়ে রীতিমতো ঢোঁক গিলছে বঙ্গ বিজেপি। সংসদ ভবন চত্বরে মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু স্পষ্ট বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত এনিয়ে কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না হচ্ছে, ততক্ষণ কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়। এতে দলই বিপদে পড়বে। এবারের উপনির্বাচনে উত্তরবঙ্গের দু’টি বিধানসভা আসনও ছিল। মাদারিহাট এবং সিতাই। সিতাইয়ে ভরাডুবি হয়েছে দলের। হাতছাড়া হয়েছে মাদারিহাট। এই অবস্থায় তাই নয়া অবস্থান নিচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি। বঙ্গ বিজেপিকে সাফ নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ ভোট পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোনও কথা বলা যাবে না।