বড়দিনে গোপাল ও মহাপ্রভুর ভোগ নিবেদনের জন্য নবদ্বীপে বিপুল চাহিদা ছানা-ক্ষীরের কেকের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এমনিতেই বড়দিন উপলক্ষে দোকানগুলিতে নামীদামি কোম্পানির হরেকরকম কেক বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি নবদ্বীপের মিষ্টির দোকানগুলিতে বা মঠ মন্দিরের দেবতার জন্য নিরামিষ ছানার বা সম্পুর্ণ ক্ষীরের কেকও তৈরি হচ্ছে। এইসময় নবদ্বীপের অধিকাংশ মন্দিরে নিরামিষ কেক তৈরি করে নিয়ে যান ভক্তরা। মন্দিরে মন্দিরে ক্ষীরের বা ছানার কেক তৈরি করা হয়।
বড়দিন মানেই কেক। প্রভু যিশুর জন্মদিনে কেক কেটে ভাগ করে দিনটি উদযাপন করার ট্রাডিশন চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এই উৎসবে বাদ পড়েন না রাধাকৃষ্ণ বা গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু, গোপাল, বলদেব বা জগন্নাথদেব। ভক্তরা তাঁদের ইষ্টদেবতাকে ছানার বা ক্ষীরের কেক নিবেদন করেন।
নবদ্বীপ বাগচী পাড়ার প্রবীণ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী বাণী ঘোষ বলেন, নবদ্বীপে বড়দিনে ছানার কেকের চাহিদা বেড়ে যায়। প্রতিবছরই প্রায় দেড় থেকে দুই কুইন্টাল ছানার কেক তৈরি করতে হয়। ওই ছানার কেক তৈরি করতে প্রথমে আগুনের মধ্যে তাওয়া বসাতে হয়। আলাদাভাবে গামলার মধ্যে ছানাটাকে চিনি, কাজু, কিসমিস, পেস্তা, বাদাম, মোরব্বা বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে মাখা হয়। এরপর ওই গামলাটাকে বসানো হয় কাঠের উনুনের আঁচে। তারপর সেটিকে ঢেকে দেওয়া হয়। এরপর ওই ঢাকনার উপরে কাঠ, ঘুঁটে দিয়ে আগুন দিতে হয়। নীচে এবং উপরে আগুন দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের পর সেটাকে নামিয়ে ফেলা হয়। প্রতি বছরই এই নিরামিষ ছানার কেকের ভীষণ চাহিদা থাকে। বড়দিনের এক সপ্তাহ আগে থেকে বেশি পরিমাণে তৈরি করতে হয়। প্রতি কেজি ছানার কেক চারশো টাকা দরে বিক্রি করি।
নবদ্বীপ গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু মন্দিরের অন্যতম সেবায়েত তথা বিষ্ণুপ্রিয়া সমিতির সভাপতি সুদিন গোস্বামী বলেন, বড়দিনে মহাপ্রভুকে ছানা ও ক্ষীর দিয়ে ঘরোয়াভাবে তৈরি কেক নিবেদন করেন বিষ্ণুপ্রিয়ার বংশের মহিলারা। এছাড়া এবছর গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর দর্শনে ওড়িশার কটকের বাসিন্দা গৃহবধু পূজা সিং নবদ্বীপের ধামেশ্বরী কুঞ্জে এসেছেন। তিনি এবার গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর জন্য ছানা ও ক্ষীর দিয়ে স্পেশাল কেক তৈরি করছেন। বুধবার বড়দিনের সকালে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর উদ্দেশে ছানার ওই কেক কাটা হবে। সোমবার থেকে কেক তৈরি করা শুরু হয়েছে।