দেশ বিভাগে ফিরে যান

মোদী সরকারের ঘোষিত প্রকল্প থেকে যায় বাজেট বক্তৃতার ঢক্কানিনাদেই

January 14, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাজেট ঘোষণার পর কয়েকদিন ধরে বাজেট নিয়ে আলোচনা, চর্চা, জয়ধ্বনি এবং বিশ্লেষণ চলে। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রবণতা কমে আসে। সেই সুযোগে ঘোষিত প্রকল্প থেকে যায় বাজেট বক্তৃতার ঢক্কানিনাদেই। বাহবা পাওয়ার জন্য একঝাঁক প্রকল্প ঘোষণা করা হবে বাজেটে। কিন্তু সেগুলি শুরু করা হবে না। চটকদার বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অর্থবরাদ্দ হবে। কিন্তু সেই অর্থ ব্যয় করা হবে না। এই নীতি তৃতীয় মোদী সরকারের। একে বিরোধীরা আরও এক ‘জুমলা’ বলেই ব্যাখ্যা করছে।

২০২৪ সালের বাজেটে ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচার খাতে ১১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করার রেকর্ড করা হয়েছে বলে অর্থমন্ত্রক নিজেই নিজের জয়ধ্বনি দিয়েছে। কিন্তু আর্থিক বছরে যখন শেষ হতে চলেছে, তখন দেখা যাচ্ছে ৪৫ শতাংশও ব্যয় হয়নি। বাকি এই ৫৫ শতাংশ অর্থ আগামী আড়াই মাসে খরচ হয়ে যাবে, এমন আশা চরম ভক্তও করবেন কি না সন্দেহ। পাশাপাশি, যে সব প্রকল্পে ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা সরকার খরচ করবে বলে বুক ঠুকে হিসেব দিয়েছিল, সেটাও রয়ে গিয়েছে প্রতিশ্রুতির খেয়ালি পোলাওয়ের হাঁড়িতেই। নজর করার মতো বিষয়, এই প্রকল্পগুলির মধ্যে সিংহভাগই কিন্তু কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সংক্রান্ত। কারণ দেখা যাচ্ছে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে—এই দাবি তুলে শেষ বাজেটে যা বরাদ্দ হয়েছিল, তার কোনও প্রকল্পই শুরু হয়নি।

কী অবস্থা প্রতিশ্রুতির ফানুসে ওড়ানো প্রকল্পগুলির? দেখে নেওয়া যাক তারই কয়েকটি। ১) দেশের সব রাজ্যের বিপুল অংশের কর্মপ্রার্থী ছাত্রছাত্রী জয়েন্ট অথবা পলিটেকনিকে পড়ার সুযোগ না পেয়ে ভর্তি হন আইটিআইতে। বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছিল, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আইটিআইয়ের মধ্যে এক হাজার প্রতিষ্ঠানের আপগ্রেডেশন হবে। অথচ এই খাতে কোনও কাজই শুরু হয়নি। ১ হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে রাজকোষেই। ২) কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ঘোষণা করা হয়েছিল এমপ্লয়মেন্ট লিঙ্কড ইনটেনসিভ স্কিম নামক একটি প্রকল্পও। বলা হয়েছিল, যে সংস্থা কর্মসংস্থান দেবে, তাদের বিশেষ উৎসাহ ভাতার ব্যবস্থা করবে কেন্দ্র। ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয় ৮ মাসের জন্য। এবছর বাজেট হয়েছে জুলাই মাসে। আর এতদিনেও সেই অর্থে হাত পড়েনি। ৩) খোদ অর্থমন্ত্রকের অধীনে থাকা অবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের নাম, ডিপার্টমেন্ট অব ইকনমিক অ্যাফেয়ার্স। সারা বছর ধরেই নানাবিধ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে—এই ঘোষণা করে এই বিভাগের জন্যই ৬৩ হাজার কোটি টাকা আলাদা বরাদ্দ করা হয়। অথচ কোনও নতুন স্কিমই গ্রহণ করা হয়নি! ৪) যে কর্মপ্রার্থীদের সেরকম কোনও ডিগ্রি, কোর্স বা প্রশিক্ষণ নেই, তাদের সরকারি পোর্টালে নথিভুক্ত করিয়ে স্কিল উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলে একটি স্কিল ডেভেলেপেমন্ট স্কিম নিয়েছিল মোদি সরকার। অর্থবর্ষ শেষ হতে আর আড়াই মাস। কিন্তু এমন কোনও স্কিল উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি। ৫) অনুসন্ধান ন্যাশনাল রিসার্চ ফান্ড নামক একটি তহবিল গঠনের কথা ছিল বিজ্ঞান গবেষণার কাজে। আপাতত সে নিয়েও উচ্চবাচ্য নেই। ৬) সেতু, সড়ক, রেল, বন্দর ইত্যাদি পরিকাঠামো নির্মাণে ১১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ সর্বকালীন রেকর্ড বলা হয়েছিল। কিন্তু ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় ৫০ শতাংশও স্পর্শ করেনি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#modi govt, #Budget, #Nirmala Sitharaman, #Finance Minister

আরো দেখুন