বন্ধ স্কলারশিপ অথচ ৬২ কোটি খরচে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ – মোদীর টিপস, নাকি অর্থের অপচয়?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ‘চায়ে–পে চর্চা’ র পর মোদীর ‘পরীক্ষা পে চর্চা’। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা প্রস্তুতি সংক্রান্ত নানা বিষয়ে কয়েক ঘণ্টার অনুষ্ঠান। আগে থেকেই নির্দিষ্ট করে রাখা হাতেগোনা পড়ুয়ার প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। বিগত তিন বছরে এই অনুষ্ঠান আয়োজনে খরচ হয়েছে ৬২ কোটি টাকা। সেই অনুষ্ঠানে অফলাইনে বা অনলাইনে যে পড়ুয়ারা হাজির থাকত, তাদের কাছে পৌঁছে যেত মোদীর ছবিসহ একটি সার্টিফিকেট। সেই সার্টিফিকেট ছাপতে প্রতি বছর কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।
সম্প্রতি, RTI-এর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। শিক্ষাবিদ, অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলছেন, অনুষ্ঠানের নামে এরকম খয়রাতি কেন? তাঁদের মতে, বিদ্যালয় থেকে গবেষণাস্তর পর্যন্ত স্কলারশিপ বন্ধ রেখেছে মোদী সরকার। বাজেটেও শিক্ষাক্ষেত্রে নামমাত্র বরাদ্দ বেড়েছে। দেশজুড়ে বহু স্কুলে এখনও পর্যন্ত প্রাথমিক পরিকাঠামো নেই। এই পরিস্থিতিতে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’র বিলাসবহুল আয়োজনের কারণ কী?
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে প্রথমবার দিল্লিতে পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানটি হয়েছিল। সেবছরের খরচের হিসেব শিক্ষামন্ত্রক দেয় নি। তবে পরবর্তী ৬ বছরে সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে ৭৮ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা। যার মধ্যে গত ৩ বছরেই খরচ ৬২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। গত ২৭ জানুয়ারি এনবিটি’র অ্যাপিলেট অথরিটি রাকেশ কুমার মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা অজয় বাসুদেবকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, অংশগ্রহণকারী পড়ুয়াদের জন্য শংসাপত্র ছাপাতে এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ নিয়ে নানা মহলে সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্র খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ২০২৩-২৪ সালে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করতে খরচ হয়েছিল ১৬ কোটি টাকা! RTI-র তথ্য বলছে, ২০১৯ -২০২৩ সালের মধ্যে এ বাবদ বরাদ্দ বেড়েছে ১৭৫ শতাংশ! তাই একাংশ শিক্ষাবিদদের বলতে শোনা যাচ্ছে, মোদীর ’আত্মপ্রচারমূলক’ এই অনুষ্ঠানের পিছনে খয়রাতি না করে স্কলারশিপ দেওয়া হলে পড়ুয়াদেরই আখেরে লাভ হতো।