এই মুহূর্তে নামী ব্র্যান্ডের জাল ওষুধের কারবার ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি! রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বর্তমানে দেশে ওষুধের বাজার ৫ লক্ষ কোটি টাকার। তার প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসাই নামী ব্র্যান্ডের। কিন্তু বাজারে নামী ব্র্যান্ডেড যা ওষুধ পাওয়া যায়, তার অন্তত ১০ শতাংশই ভেজাল! আমতা কাণ্ডের পর এরকমই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে আসছে। ভেজাল ওষুধের কারবারিরা জালিয়াতিটাকে একেবারে শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে। ফলে কপালের ভাঁজ চওড়া হচ্ছে ড্রাগ কন্ট্রোলের কর্তাদের। ব্যাচ নম্বর থেকে স্ট্রিপ, সবই নিখুঁতভাবে নকল করে ফেলছে জালিয়াতরা। জানা যাচ্ছে, দেশে এই মুহূর্তে শুধু নামী ব্র্যান্ডের জাল ওষুধেরই কারবার ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি!
আমতা কাণ্ডের তদন্তে ওষুধ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য পেশাদারের সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জেনেছেন, এখন ব্র্যান্ডেড ওষুধের এই ২ লক্ষ কোটি টাকার বাজারে মিশে আছে অন্তত ১০ শতাংশ জাল ওষুধ। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি। জেনেরিক এবং ব্র্যান্ডেড জেনেরিক ওষুধের মধ্যে ভেজালের পরিমাণ ধরলে টাকার অঙ্ক আরও বাড়বে। তবে এখন সবচেয়ে বেশি জাল হচ্ছে নামী কোম্পানির ব্র্যান্ডেড ওষুধই, জেনেরিক নয়।
সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রেশার, সুগার, হার্ট, আগুনে পোড়া সহ একাধিক সমস্যার ভেজাল ওষুধের তদন্তে উঠে আসা তথ্যগুলি কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোলের (সিডিএসিও) শীর্ষকর্তাদের জানিয়ে রেখেছেন পশ্চিমবঙ্গ ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকরা। তাঁরা আশা করছেন, বাংলার ভেজাল ওষুধ কাণ্ডে যেভাবে বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র সহ একের পর এক রাজ্যের কানেকশন জানা যাচ্ছে, আন্তঃরাজ্য টাস্ক ফোর্স গঠন করবার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। বড় বড় ওষুধ প্রস্তুতকারকরা মিলে তৈরি করেছে ইন্ডিয়ান ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যালায়েন্স। তাদেরই প্রতিনিধিরা ক’দিন আগে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে যান। সেই বৈঠকে অন্যতম বিষয় ছিল, কীভাবে আসল ওষুধের প্রায় নিঁখুত (কখনও কখনও আসলকেও ছাপিয়ে যাওয়া) জাল প্যাকেজিং তৈরি করছে কারবারিরা? ওষুধের প্যাকেট থেকে অ্যালুনিয়ামের স্ট্রিপ—সবেতেই এত দক্ষ নকলনবিশী কীভাবে সম্ভব? তাদের সঙ্গে ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির কর্মীদের একাংশের যোগ নেই তো? সন্দেহের তালিকায় বেশ কয়েকজনের নামও জানানো হয়েছে।