London Diaries: ‘অপর্চুনিটিজ ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল’, লন্ডনে বাণিজ্য সম্মেলনে বাংলায় বিনিয়োগ আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মঙ্গলবার, লন্ডনের সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলের এডওয়ার্ডিন হলের বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীকে পাশে নিয়ে বাংলায় বিনিয়োগের জন্য শিল্পপতিদের আহ্বান জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘অপর্চুনিটিজ ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল’ শীর্ষক সম্মেলনের বার্তা ছিল বাংলাই বিনিয়োগের সেরা ঠিকানা। রাজ্যের শিল্পপতিদের গলাতেও সেই সুর শোনা গেল।
ফিকি, ডব্লুবিআইডিসি এবং ইউকেআইবিসি যৌথভাবে মঙ্গলবারের বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজন করেছিল। বৈঠক শুরুর আগে প্রবীণ শিল্পপতি লর্ড স্বরাজ পলের সঙ্গে দেখা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আমন্ত্রিত শিল্পপতিদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, “আমি ব্রিটেনকে ভালোবাসি। বাংলা নিয়ে আপনাদের আগ্রহ দেখে আমি সত্যিই আপ্লুত। এখানে ব্রিটিশ এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি রয়েছেন। তাঁর কাছে আর্জি, কলকাতা-লন্ডন একটা সরাসরি বিমান কি চালানো যায় না? এতে যাতায়াত অনেকটাই সহজ হবে। ৮ ঘণ্টার দূরত্ব কেন ১৮ ঘণ্টায় আসতে হবে বলুন তো! কলকাতা, বাগডোগরা বিমানবন্দরে জ্বালানির উপর আমরা কর ছাড় দিই। আপনারা সরাসরি বিমান চালানোর জন্য প্রস্তাব নিয়ে এলে অতিরিক্ত ছাড় পাবেন। সঙ্গে কথা দিচ্ছি, একটাও আসন ফাঁকা থাকবে না।”
বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা বোঝাতে জিডিপির পরিসংখ্যান তুলে ধরে মমতা বলেন, “রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মতো লড়াই করছি আমরা। দেশের জিডিপির থেকে বাংলার জিডিপি বেশি। মূল্যবৃদ্ধির হার দেশের থেকে বাংলায় কম। সর্বত্র বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পেলেও ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে আমরা তা ৪৬ শতাংশ কমাতে সফল হয়েছি। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইজ বেস্ট বেঙ্গল।” বাণিজ্য মহলকে আহ্বান জানিয়ে মুখ্যসচিব বললেন, “পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারত তো বটেই, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে হল বাংলা। আপনারা আসুন এখানে। দক্ষ শ্রমিকের অভাব হবে না।”
সাত পুরুষ ধরে বাংলায় ব্যবসা করার সুখস্মৃতি ও অভিজ্ঞতার কথা জানান আরপি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান শাশ্বত গোয়েঙ্কা। ব্যবসার পরিকাঠামো নিয়ে বাংলার দরাজ প্রশংসা করেন অম্বুজা নেওটিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষবর্ধন নেওটিয়া। ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী শিল্পপতিদের বার্তা দেন, “নেপাল-ভুটান-বাংলাদেশে ব্যবসা করতে গেলেও গেটওয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা। সেই শহরের সঙ্গে লন্ডনের প্রচুর মিল। বাংলার চা শিল্প-পাট শিল্প তো জগৎসেরা। এগুলো বলার একটাই অর্থ। পশ্চিমবঙ্গ আপনাদের বিনিয়োগের আদর্শ ঠিকানা হতেই পারে।”
তেগা ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মেহুল মোহাঙ্ক এদিন দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন, কল্যাণীতে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে তাঁরা। ডিএনএ সিকোয়েন্সিং বিশেষজ্ঞ ডঃ লাকমল জয়সিংহে জানান, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভারতে আসছে তাঁদের সংস্থা। বেঙ্গালুরুতে অফিস আছে, দিল্লিতেও অফিস তৈরি করবেন। পরের লক্ষ্য কলকাতা।