আবারও সুপ্রিম কোর্টের উপর খড়্গহস্ত ধনখড়, পাল্টা কী বলছে শীর্ষ আদালত?

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: দেশে সংসদ তথা মোদী সরকার বনাম সুপ্রিম কোর্ট যুদ্ধ চলছে রীতিমতো। মঙ্গলবার ফের
উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় শীর্ষ আদালতকে নিশানা করে বলেন, “পার্লামেন্ট সর্বোচ্চ। তার উপরে কেউ নয়।” এদিনই কর্ণাটকের আদালত অবমাননার মামলা প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেছেন, বিচার ব্যবস্থাও প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে। তবু জেনে রাখুন, এসবে উদ্বিগ্ন নয় বিচার ব্যবস্থা। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর এই পর্যবেক্ষণ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের পর দেশের প্রধান বিচারপতি হবেন বিচারপতি সূর্য কান্ত।
বিচারপতির এহেন মন্তব্যে মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়ছে। বার বার অভিযোগ উঠেছে, অবিজেপি তথা বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতি আটকে রাখছেন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিয়ে জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি-রাজ্যপাল অনির্দিষ্টকাল ধরে বিল আটকে রাখতে পারেন না। তারপরই উপ রাষ্ট্রপতি এবং বিজেপির একের পর এক সাংসদ লাগাতার সর্বোচ্চ আদালতকে আক্রমণ করছেন। এই প্রবণতায় রাশ টানার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না সরকারকের শীর্ষস্তর থেকেও। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি নীরব প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে?
উপ রাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় সুপ্রিম কোর্টকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, “যারা নির্বাচিত নয়, তারা সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে, আইনসভাকে নির্দেশ দেবে, এটা হতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। সেটা আছে সরকার অথবা জনপ্রতিনিধিদের।” বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে আরও বিতর্কিত মন্তব্য করেন, তিনি বলেন, “ধর্মীয় সংঘাত তৈরির প্ররোচনাদাতা হল সুপ্রিম কোর্ট।” দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কনৌজের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুব্রত পাঠক, বিহারের বিজেপি সাংসদ মানন কুমার মিশ্ররা সুপ্রিম কোর্টকে আক্রমণ করে চলেছেন।
সংবিধানের ৭৫ তম বর্ষ উপলক্ষ্যে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে উপ রাষ্ট্রপতি ফের সুপ্রিম কোর্টকে আক্রমণ করেন। বলেন, “জরুরি অবস্থা জারির পর প্রাক্তন এক প্রধানমন্ত্রী (ইন্দিরা গান্ধী) ১৯৭৭ সালে পরাজিত হয়ে নিজের ভুলের দায় স্বীকার করেছিলেন। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীরও দায়বদ্ধতা আছে। সেই সময় জরুরি অবস্থা জারির বিপক্ষে দেশের ন’টি হাইকোর্ট তাদের অভিমত পাঠিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট কেন সেই সুপারিশ অগ্রাহ্য করেছিল? জরুরি অবস্থার পক্ষেই রায় দেওয়া হয়েছিল। সংবিধানে অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়নি, যারা পার্লামেন্টের উপরে কর্তৃত্ব ফলাবে।” এখানে প্রশ্ন, আইনসভাই যদি সর্বোচ্চ হয় তাহলে রাজ্যের আইনসভার ক্ষেত্রে কেন বৈষম্যমূলক আচরণ? সংসদ সর্বোচ্চ হলে একই নিয়মে বিধানসভাও সর্বোচ্চ! সেক্ষেত্রে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপাল কীভাবে আটকে রাখেন? খোদ জগদীপ ধনখড় বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন বহু বিল আটকে রাখতেন। তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগও উঠত।