গোয়ায় বড় সংখ্যায় আসন দখলের লক্ষ্যে এগোচ্ছে তৃণমূল
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতা দখলের পর এখন জাতীয় স্তরে নিজেকে মেলে ধরতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই লক্ষ্যে তৃণমূল নেতৃত্বের নজর এখন ত্রিপুরার পাশাপাশি গোয়াতে। ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোট ২০২৩ সালে। আর আগামী বছরই ভোট রয়েছে দেশের পশ্চিম প্রান্তের ছোট্ট রাজ্য গোয়ায়। ইতিমধ্যে গোয়া সফর করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। গোয়াবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলার জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে ক্ষমতায় এলেগোয়াবাসীর জন্যও রূপায়িত করার। কিন্তু তার আগেই নাকি তৃণমূলনেত্রীকে টুকলি করতে শুরু করেছেন প্রমোদ সাওয়ন্ত! এমনটাই অভিযোগ ঘাসফুল শিবিরের।
‘তুমচ্ছা দারি’ ও তৃণমূলের প্রশ্ন
শনিবার গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সায়ন্ত ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন, রবিবার রাজ্যে তিনি নতুন প্রকল্পের সূচনা করতে যাচ্ছেন। সেই প্রকল্পের নাম ‘সরকার তুমচ্ছা দারি’ (Sarkar Tumchya Daari)। বাংলায় যার অর্থ দুয়ারে সরকার। এই নিয়েই ময়দানে নেমেছ তৃণমূল কংগ্রেস। স্পষ্ট অভিযোগ, বিজেপির ওই প্রকল্প আসলে ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar)-এর হুবহু নকল প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের প্রকল্পকেই নিজের মতো করে গ্রহণ করে অন্য নাম দিয়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত। ট্যুইটারে এ নিয়ে বিজেপিকে খোঁচাও দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। তৃণমূলের দাবি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অর্ধেকের বেশি প্রকল্প বাংলা মডেলকে অনুসরণ করে করা। এখন সেই পথে হাঁটছে গোয়ার বিজেপি সরকারও।
গোয়ায় ঘর গোছাচ্ছে জোড়াফুল
আরব সাগরের পাড়ে ছোট্ট রাজ্যটিতে জোড়া ফুল ফোটাতে তৎপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। আগামী বছরের শুরুতেই ৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় ভোট । আর সেখানেই বড় সংখ্যায় আসন দখলের লক্ষ্যে এগোচ্ছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই বিধানসভা ভোটের প্রচারও শুরু করে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। গোয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় পাঠানো হবে গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমানে তৃণমূল নেতা লুইজিনো ফেলেইরোকে।
গোয়ার বর্তমান পরিস্থিতি
৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় বিজেপির বর্তমানে বিধায়ক সংখ্যা ২৭, কংগ্রেসের ৫, গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির ৩, ন্যাশালসিস্ট কংগ্রেস পার্টির১, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির ১ ও নির্দলদের হাতে রয়েছে ৩টি আসন। যদিও ২০১৭ সালে ফল এমন হয়নি। সে সময় গোয়ায় কংগ্রেস পেয়েছিল ১৭টি আসন। বিজেপি পেয়েছিল মাত্র ১৩টি আসন। কিন্তু দলবদলের খেলায় সেই দান পাল্টে যায়।
জোট ছাড়া সাফল্য সম্ভব?
বিজেপির বিরুদ্ধে একমাত্র শক্তিশালী বিরোধী যদি কেউ হতে পারে, সেটা তৃণমূল, প্রমাণ করতে চাইছে জোড়াফুল শিবির। আগামী বছরের শুরুতে যে পাঁচ রাজ্যে ভোট হতে চলেছে, তার মধ্যে রয়েছে গোয়াও। তৃণমূল গোয়াকে পাখির চোখ করলেও সমীক্ষার রিপোর্ট কিন্তু আশা ব্যঞ্জক নয়। বিভিন্ন সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, গোয়ায় ক্ষমতা ধরে রাখতে চলেছে বিজেপি। ৪০ আসন বিশিষ্ট গোয়া বিধায়নসভায় বিজেপি অর্ধেকের আশেপাশেই আসন পাবে। সরকার গড়ার ম্যাজিক সংখ্যা সেখানে ২১। কংগ্রেস আর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির মধ্যে লড়াই হবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানের। সেখানে তৃণমূলের কোনও চিহ্ন নেই। যেটা লক্ষ্যনীয় তা হল, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির মতো পাঁচটি রাজ্য ভিত্তিক দল আছে। এই আবহে গোয়ায় জোড়াফুল ফোটাতে জোটের পথে হাঁটা ছাড়া উপায় নেই তৃণমূলনেত্রীর, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।