রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

মানুষের হাতে নগদ অর্থ দিন – নির্মলাকে পরামর্শ চন্দ্রিমার

November 16, 2021 | 2 min read

শুধুমাত্র নির্বাচনী চমক দিলে অর্থনীতি (Economics) পুনরুদ্ধার হবে না। তার জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে মানুষের হাতে নগদ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা প্রয়োজন কেন্দ্রীয় সরকারের। সোমবার দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের (Nirmala Sitharaman) সঙ্গে বৈঠকে এমনই প্রস্তাব দিলেন এ রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya)। পরিকাঠামো এবং শিল্পের উন্নয়ন নিয়ে এদিন বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে ডেকেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেই বৈঠকে রাজ্যের মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়া এবং অর্থনীতিকে সচল করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছেন, সেই কথা তুলে ধরেছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। একইসঙ্গে বলেন, “রাজ্যগুলির অবস্থান ভাল হলে তবেই দেশের সার্বিক অবস্থা ভাল হবে, এবং সেটাই কাঙ্ক্ষিত।” তাঁর আরও দাবি, “মানুষের হাতে টাকা পৌঁছনো খুবই জরুরি। না হলে অর্থনীতির চাকা মসৃণভাবে ঘুরতে পারবে না। এখন মানুষের হাতে টাকা পাঠানোর মতো পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে কেন্দ্রকে। শুধুমাত্র নির্বাচনী চমক দিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কথা বললে চলবে না।”

সোমবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যগুলির বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) বক্তব্য পেশের সুযোগ ছিল একেবারে শেষের দিকে। শুরুর দিকে অন্যান্য রাজ্যগুলি বেশি সময় পেলেও পশ্চিমবঙ্গ শেষদিকে থাকায় মাত্র তিন মিনিট বরাদ্দ হয়। তখনই চন্দ্রিমা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে জানান, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গেলে এত অল্প সময়ে সম্ভব নয়। তার জন্য আরও কিছুটা অতিরিক্ত সময় দেওয়া জরুরি। সময় বরাদ্দ হযওয়ায় রাজ্যের বক্তব্য সবিস্তারে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করেন তিনি। রাজ্য জানিয়েছে, কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স ৪.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে অক্টোবর মাসে। পরিযায়ী শ্রমিক ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ এখনও শিল্প কারখানাগুলি তাদের কাজ দিতে পারছে না। গত অর্থবর্ষের তুলনায় জিডিপি ২৪.৪ শতাংশ হলেও চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ২০.১ শতাংশ হয়েছে। যেটা কখনওই আশাব্যঞ্জক হতে পারে না। এমনকি ব্যক্তিগত ক্রয় ক্ষমতা ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের তুলনায় এখন অনেকটাই কম।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে রাজ্য স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, কোভিড (COVID-19)মোকাবিলার পাশাপাশি একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলাও রাজ্যকে করতে হয়েছে। ত্রাণ এবং অন্যান্য খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ‘স্বাস্থ্যসাথী’, ‘দুয়ারে রেশন’, ‘কন্যাশ্রী’র মতো বিভিন্ন মানবিক প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের হাতে টাকা এবং সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। রাজ্যের জিডিপি ২০১৫–১৬ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২০–২১ অর্থবর্ষে ১২.৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের জিডিপি যেখানে ৭.৩ শতাংশ কমেছে, সেখানে রাজ্যের জিডিপি বৃদ্ধির হয়েছে ১.৬ শতাংশ।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানান, আরও বিনিয়োগ (Investment) আসছে রাজ্যে। তাজপুর সমুদ্র বন্দর, দেউচা-পাচামি কয়লা খনি, ইথানল পলিসি, ডেটা সেন্টার তৈরি-সহ একাধিক বিষয়ে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করছে। এদিন রাজ্যের তরফে নির্মলা সীতারমণের কাছে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বরাদ্দ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলা হয়। এমনকী প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্য অর্থ কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে। গোটা দেশ থেকে যে কর সংগ্রহ করা হয় তার যে অংশটি রাজ্যের পাওয়ার কথা, তা থেকে অনেক কম টাকা পাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই বিষয়গুলি দ্রুত সমাধানের দাবি তোলা হয়েছে রাজ্যে তরফে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Nirmala Sitharaman, #Finance Minister, #Chandrima Bhattacharya, #Economics

আরো দেখুন