থানায় গেলে ফেরানো যাবে না দুর্ঘটনাগ্রস্থ আর্তের, নির্দেশিকা জারি করছে নবান্ন
সাহায্যের আর্জি নিয়ে কোনও আর্ত মানুষ থানায় গেলে, শুধুমাত্র ‘এলাকা’ আমাদের নয় বলে দায় সারতে পারবে না রাজ্য বা কলকাতা পুলিস। আর্তের সাহায্যটাই জরুরি। তারপর ঠিক হবে থানার ‘এলাকা’। খুব শীঘ্রই এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করতে চলেছে নবান্ন। সম্প্রতি কয়েকটি পথ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এলাকা নির্ধারণ নিয়ে কলকাতা ও রাজ্য পুলিসের ‘টাপান-উতোর’ নজরে এসেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর নির্দেশ, আগে দুর্ঘটনায় পতিত মানুষের সেবা, তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো। কীসের এত ইগো! থানায় গেলে ফেরানো যাবে না। কলকাতা না রাজ্য পুলিস, সেই এলাকা নির্ধারণ পরে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশকেই সরকারি মোড়কে ভরতে দু’একদিনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে নবান্নে বৈঠক করবেন স্বরাষ্ট্র সচিব বিপি গোপালিকা। আর্ত মানুষের সেবায় এহেন অভিন্ন আচরণবিধি নির্ধারিত হওয়ার পরই তা নির্দেশিকা আকারে প্রকাশ করা হবে বলে স্বরাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও ঘটনা ঘটলে, আর্ত কোনও ব্যক্তি থানায় গেলে সঙ্গে সঙ্গে তার অভিযোগ নিতে হবে। এটা রাজ্য পুলিস, এটা কলকাতা পুলিসের এলাকা বলে দায় এড়ানো যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে স্বরাষ্ট্রসচিব বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করতে বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে কলকাতা পুলিস, বিধাননগর পুলিসসহ রাজ্য পুলিসের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। সেখানেই এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, চিংড়িঘাটা, বরানগর সহ পরপর কয়েকটি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন থানায় দায় এড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। দুর্ঘটনা ঘটার পর পরিবারের লোকেরা থানায় গেলে তাঁদের বলা হয়, এটা তাদের এলাকার মধ্যে পড়ে না। সল্টলেকে যান। আবার সল্টলেকের থানা থেকে বলা হয়, ওই এলাকা কলকাতা পুলিসের মধ্যে পড়ে। এর ফলে চরম হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারন মানুষকে। সেই হয়রানি থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা পেতেই স্বরাষ্ট্রদপ্তর উদ্যোগী হয়েছে।
গত বুধবার মধ্যমগ্রামে উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটার দুর্ঘটনায় পুলিসের দায়সারা ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেন, ইগো ছেড়ে সমন্বয় রেখে কাজ করুন। কলকাতা ও সল্টলেক পুলিসকে এই বার্তাই দিয়েছিলেন তিনি। তার পর চিংড়িঘাটায় পুলিসি তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে। কলকাতা ও বিধাননগর কমিশনারেট পুলিসের মধ্যে সমন্বয় বেড়েছে। একইরকম সমস্যা দেখা দেয় বরানগর এলাকাতেও। সেখানেও এলাকা কার, কলকাতা পুলিস নাকি বারাকপুর কমিশনারেটের, তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। এই সব সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগী হয়েছে নবান্ন।