হচ্ছে টা কী? বিভাগে ফিরে যান

বাঙালির মাছ খাওয়াও বন্ধ করতে চায় গেরুয়া শিবির?

December 7, 2021 | 2 min read

২০১৯শের সাধারণ নির্বাচনের আগে আগে খোদ কলকাতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে কিছু মানুষ গলায় প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। তাতে লেখা থাকত মাছ মাংস না খাওয়ার নানা বাণী। বাঙালির মাছ খাওয়াকে বিরোধ করে কয়েক বছর ধরেই নিরামিষাশী অবাঙালিরা একথায় আন্দোলন চালিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। তবে এখনও পর্যন্ত মাছ খাদকদের বিরুদ্ধে কোনও ‘বিদ্বেষ’ বিজেপির তরফে শোনা যাচ্ছিলো না । সেই আশায় কুড়ুল মেরে এবার মাছ না খেয়ে মাছের থেকে আশীর্বাদ নেওয়ার পরামর্শ দিলেন মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য। মনে করান মৎস্য অবতারের কথা।

মন্ত্রীর কথা দেবী লক্ষ্মীর ‘বোন’ মাছ। তাই মাছের আশীর্বাদ নেওয়া উচিত। গুজরাতে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে কেন্দ্রীয় মৎস্য ও পশুপালনমন্ত্রী পুরুষোত্তম রূপালা বলেন, ‘দেবী লক্ষ্মীর বাবার বাড়ি সমুদ্র। আবার মাছও সমুদ্রের কন্যা। এক অর্থে, দেবী লক্ষ্মী এবং মাছ আসলে দুই বোন। আপনারা দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ চাইলে তাঁর বোনেরও আশীর্বাদ প্রার্থনা করবেন।’

বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই খাদ্য স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে ভারতবাসীর। এবার বাঙালির প্রিয় মাছের উপর কোপ দেওয়া হবে? মোদী মন্ত্রিসভার সদস্যের মন্তব্যে অনেকে তেমনই ইঙ্গিত পেয়েছেন।

কয়েকদিন আগেই বিজেপি শাসিত রাজ্য গুজরাতের একাধিক শহরে প্রকাশ্যে আমিষ বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তাছাড়া বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি গরুর মাংস খাওয়ার বিরোধিতায় সরব। বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যে এই সংক্রান্ত আইনও আছে।

পূর্ববঙ্গের মত্‍স্যজীবিদের লোকাচার আছে, বিজয়া দশমীর পর থেকে তারা আর ইলিশ মাছ ধরেন না l ফের ইলিশ ধরা শুরু হয় শ্রীপঞ্চমী থেকে l সেই হিসাবে, অনেক বাড়িতেই সরস্বতী পুজোতেই গোটা বছরের ইলিশ ভোজের সূচনা। চলে বিজয়া দশমী অবধি। এর পরে আর ইলিশ খাওয়া চলে না। ,ইস্টবেঙ্গলের ইলিশ আর মোহনবাগানের চিংড়ীর যুদ্ধ এবার ১০০ বছর পার করল। এতটাই মাছের সঙ্গে বাঙালির একাত্মতা।

ভারতে এর আগে গোমাংস বহন বা রাখার জন্য পিটিয়ে খুন করার ঘটনা ঘটেছে। এবার বাঙালির প্রিয় খাদ্য নিয়ে এহেন মন্তব্যে জেগেছে আশঙ্কা। তেমন হলে কি দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদাররা বাংলার রাজনীতিতে বিজেপিকে আর ‘জীবিত’ রাখতে পারবেন? উঠতে পারে প্রশ্ন। হিন্দুত্ববাদের নামে মাছের উপর কোপ যে বাঙালি মানবে না, এ কথা বলাই বাহুল্য। তাই ‘নিরামিষ খাওয়ার উপকারিতা’ নিয়ে গেরুয়া শিবিরের সোশ্যাল মিডিয়া প্রচার এরাজ্যে খাটবে বলে মনে হয় না।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#HTK, #West Bengal, #fish, #food habits, #bjp, #bengalis

আরো দেখুন