নয়াচরে ফিশিং হাব ও ইকো-ট্যুরিজম পার্কের জন্য সার্ভে শুরু আজ থেকেই
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত নয়াচরে প্রস্তাবিত ফিশিংহাব ও ইকো ট্যুরিজম পার্কের জন্য আজ, মঙ্গলবার থেকেই সার্ভে শুরু হচ্ছে। এজন্য চারটি সার্ভে টিম গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক(উন্নয়ন) দিব্যা মুরুগেসন ওই চারটি টিমের কাজ তদারকি করবেন। এছাড়াও টিমের প্রধান হয়েছেন জেলা পরিকল্পনা অফিসার, যুগ্ম প্রধান হয়েছেন হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী আধিকারিক, অ্যাসোসিয়েট অফিসার হয়েছেন সুতাহাটার বিডিও, ওই ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিসার এবং মৎস্য দপ্তরের সহ অধিকর্তা(প্রশাসন)। ওই টিমের অধীনে মোট চারটি সার্ভে টিম নয়াচরে কোথায় কতটা জমি রয়েছে, তানিয়ে ফিল্ড সার্ভে করবে। সার্ভে টিম-১, ২, ৩ ও ৪ ক্যাটাগরিতে ভাগ করে আজ, মঙ্গলবার থেকেই তাদের কাজে নিয়োগ করা হচ্ছে। প্রতিটি টিমে চারজন করে আছেন। তাঁদের মধ্যে রেভিনিউ অফিসার, আমিন, সহ মৎস্য অধিকর্তা পদ মর্যাদার অফিসার ও কর্মীরা আছেন।
সোমবার বিকেলে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি ওই চারটি সার্ভে টিম এবং টিমের মাথায় থাকা অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে মৎস্য, বন, বিদ্যুৎবণ্টন, পর্যটন, ভূমি প্রভৃতি দপ্তরের অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। হলদিয়ায় ওই মিটিংয়ে নয়াচরে রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা এবং আগামী দিনের কর্মসূচি নিয়ে রূপরেখা বেঁধে দেন জেলাশাসক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই নয়াচরে ফিশিংহাব করার কথা ঘোষণা করেছেন এবং সেইমতো জেলা প্রশাসন পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জেলাশাসক উপস্থিত অফিসারদের অবহিত করেন।
আজ, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় সার্ভে টিমের অফিসাররা নয়াচরে হাজির হবেন। তাঁরা রাত্রিবাস করবেন বলেও জানা গিয়েছে। নয়াচরে যাওয়ার পরই ফেরার তাড়া থাকে। কারণ, ভাটার সময় ফিরতে না পারলে রাত কাটানো ছাড়া উপায় থাকে না। গত ২৪নভেম্বর রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অত্রি ভট্টাচার্য সরেজমিনে নয়াচর ভিজিট করে গিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন জেলা প্রশাসন এবং অন্যান্য দপ্তরের অফিসারররা। ১১তারিখ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই প্রকল্পের জন্য রিপোর্ট পাঠানো হয় নবান্নে। রাজ্য সরকার নয়াচরে ওই প্রকল্প রূপায়ণে সবুজ সঙ্কেত দিতেই তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন।
নয়াচরে মোট ১২হাজার একর জমি রয়েছে। তারমধ্যে প্রায় দেড় হাজার একর জমি কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের। বাকি জমি ভূমি দপ্তরের অধীনে রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪পরগনার পাঁচ হাজারের বেশি বাসিন্দা ওই এলাকায় মাছ চাষের সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি নয়াচরে সমবায়ের মাধ্যমে মাছচাষে যুক্ত ১২টি সোসাইটির কর্মকর্তা তমলুকে জেলা পরিষদে এসে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, মৎস্যমন্ত্রী, জেলা পরিষদের সভাধিপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সরকারের স্কিম রূপায়ণে যাতে তাঁদের রুজিরুটিতে কোনও সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছিলেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে ১২হাজার একর জমির মধ্যে পরিকাঠামো উন্নয়ন, মাছ চাষ, ইকো পার্ক তৈরি করতে করতে কোথায় কতটা জমি লাগানো হবে, তা নিয়ে সার্ভে হবে। ফিশিং হাব, ইকো ট্যুরিজম, সোলার প্ল্যান্ট, রাস্তাঘাট প্রভৃতি তৈরি হবে। ওই প্রকল্প রূপায়িত হলে নয়াচরে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে। মীনদ্বীপকে ঘিরে কর্মসংস্থান তৈরি হবে। জেলাশাসক বলেন, আপাতত নয়াচরে ফিল্ড সার্ভে শুরু হচ্ছে। রাজ্যের নির্দেশমতো আমরা নয়াচরে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ফিশিং হাবের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব।