লকেটের সঙ্গে বহিষ্কৃত নেতা রীতেশের সাক্ষাৎ , অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির
সোমবার রাজ্যের চার পুরনিগমের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপি-র। আর এই দিনেই গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা হগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন দল থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হওয়া রীতেশ তিওয়ারি। ঘটনাচক্রে, সোমবারই চার পুরনিগমের ফল নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য বিজেপি-কে তুলোধনা করতে দেখা গিয়েছে বরখাস্ত হওয়া জয়প্রকাশ মজুমদারকেও। তার পরেই লকেটের সঙ্গে রীতেশের সাক্ষাৎ গেরুয়া শিবিরের জল্পনা তৈরি হয়েছে।
গত সপ্তাহে বুধবারই উত্তরাখণ্ডে গিয়ে লকেটের সঙ্গে দেখা করে বৈঠক করেছিলেন পদ্ম-শিবিরের অন্দরে ‘বিদ্রোহী’দের নেতা তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। সাংগঠনিক হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ থেকে মতুয়া বিধায়কদের বেরিয়ে যাওয়া থেকে ‘বিদ্রোহী’দের নিয়ে চড়ুইভাতি করা— সবেতেই নেতৃত্বে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনুকে। তাঁরই নেতৃত্বে প্রথম বার কলকাতায় ‘বিদ্রোহী’দের বৈঠক বসেছিল। সেই ‘বিদ্রোহী’দের তালিকায় ছিলেন রীতেশও। তার পরেই দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলে বরখাস্ত হয়েছেন রীতেশ এবং জয়প্রকাশ।
পদ্মের ‘বিদ্রোহী’রা এর আগে একাধিক বার দাবি করেছে, লকেট তাঁদের সঙ্গেই আছেন। শান্তনুর সঙ্গে হুগলির সাংসদের বৈঠকের পর সেই দাবি আরও জোরালো হয়েছে। কিন্তু এই দাবিকে লকেট অবশ্য ‘বৈধতা’ দেননি। কিন্তু সোমবার রাজ্য বিজেপি-র ‘মন খারাপ’-এর দিনে রীতেশের সঙ্গে লকেটের সাক্ষাৎ সেই দাবিকেই আবার টেনে তুলে আনল। রীতেশও স্বীকার করে নিয়েছেন, পুরনির্বাচনের ফল নিয়ে লকেটের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে হয়েছে। রীতেশের কথায়, ‘‘পুরনিগমের নির্বাচনে যা ফল এল, তা নিয়েই আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। কেন খারাপ ফল হল, তা নিয়ে আলোচনা করেছি।’’ এ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন লকেটও। জানিয়েছেন, দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়েও কিছু কথা হয়েছে। কিন্তু সে ব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছুই বলতে চাননি তিনি। প্রসঙ্গত, বর্তমানে উত্তরাখণ্ডে বিজেপি-র সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন লকেট। সোমবারই ওই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। তার পরেই সেখান থেকে দিল্লি চলে এসেছেন লকেট।
পুরনির্বাচনের ফলঘোষণার মাঝেই সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে নিশানা করেছেন জয়প্রকাশ। তাঁর দাবি, যে নেতাদের জন্য বঙ্গ বিজেপি ভাল ফল করেছিল, এখন তাদের একঘরে করে রাখা হচ্ছে। বলেন, ‘‘এই পরাজয়ের পর কে পদত্যাগ করবেন, ঠিক করুন। অসহায় মজুমদার, টুইটার মালব্য, আপনারা বসে ঠিক করুন কারা এই হারের দায় নিয়ে পদত্যাগ করবেন। ভোটের ফল ভাল হলে তার কৃতিত্ব আপনারাই নিতেন। পরাজয়ের দায়ভারও আপনাদের নিতে হবে। শুধু শুধু হাই কোর্ট, আর রাজভবন দেখিয়ে পার পাবেন না।’’ এ-ও বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে আমাকে বহিষ্কার করেছে। হাতের তালুর মতো চিনতাম বিজেপি-কে। জীবনের আট বছর সময় দিয়েছি পার্টিকে। সেই অধিকার থেকেই বলছি, সাধারণ কর্মীদের স্বার্থে বলছি। চক্রান্তকারী নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলছি।’’