শ্রীরামপুরের মুকুটে নতুন পালক, ঐতিহাসিক ডেনিস গভর্নমেন্ট হাউস সংস্কারের পর হল উদ্বোধন
ঐতিহাসিক শহর শ্রীরামপুরের মুকুটে নতুন পালক। একদা ডেনিস উপনিবেশের স্মারক ডেনিস গভর্নমেন্ট হাউস পুনর্গঠনের পর আজ উদ্বোধন হল। শ্রীরামপুর শহর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে ডেনিস স্থাপত্য। হুগলি নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা শ্রীরামপুরের অনেক ইতিহাস।
হুগলি জেলার চুঁচুড়ায় ওলন্দাজ, চন্দননগরে ফরাসি এবং শ্রীরামপুরে ছিল ডেনিস উপনিবেশ। সেই সময়কালের সব স্থাপত্যে কালের নিয়মে ক্ষয় ধরেছে। জীর্ণ হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। ইতিহাসের সাক্ষী সেই সব স্থাপত্যকে বাঁচিয়ে রাখতে এগিয়ে আসে ওয়েস্টবেঙ্গল হেরিটেজ কমিশন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ডেনমার্ক সরকার, কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়।গত ১৫ বছর ধরে শুরু হয়েছে শ্রীরামপুরের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে প্রয়াস। ডেনমার্ক ন্যাশনাল মিউজিয়াম, কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়, রিয়্যালড্যানিয়া এবং রাজ্য হেরিটেজ কমিশন, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এবং পর্যটন দফতরের প্রয়াসে শ্রীরামপুরের প্রাচীন স্থাপত্যগুলো ফিরে পাচ্ছে তার প্রকৃত অবয়ব।
১৮০৫ সালে তৈরি শ্রীরামপুর সেন্ট ওলাভ চার্চ সংস্কার সম্পূর্ণ হয়েছে ২০১৭ সালে। শ্রীরামপুর মহকুমা শাসকের দফতর তথা আদালত প্রাঙ্গণে একে একে নর্থ গেট, সাউথ গেট, রেড বিল্ডিং এবং ডেনিস গভর্নমেন্ট হাউস সংস্কার তথা পুনর্নির্মাণ শেষ হয়েছে। পুরনো আকৃতি বজায় রেখে পুনর্নির্মিত হয়েছে ডেনমার্ক ট্যাভার্ন। ডেনিস গভর্নমেন্ট হাউসের মধ্যে শ্রীরামপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর একটি স্থায়ী প্রদর্শশালাও গড়ে উঠেছে।
শ্রীরামপুর ইনিশিয়েটিভের মুখ্য সংযোজক বিজ্ঞানী বেনতে উলফ ও ঐতিহাসিক সিমন রাস্টেনের প্রয়াসে এসব কাজ হচ্ছে। শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি এবং পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান শুভাপ্রসন্ন, ডেনিস দূত ফেড্রি স্নাভনে প্রমুখ।
১৭৭০-এর দশকে দিনেমার প্রশাসনিক প্রধানের কার্যালয় ও বাসস্থান হিসাবে ব্যবহারের জন্য ভবনটি তৈরি হয়। ১৮৪৫ সাল পর্যন্ত দিনেমার শাসনকালে বেশ কয়েকবার ভবনটি পুনর্নির্মিত হয়। আকারেও বাড়ে। দোতলায় ঘর তৈরি হয় ১৮৪২ সালে। ব্রিটিশ শাসনের সময় মহকুমা শাসকের দফতর ও আদালত ভবন হিসাবে ব্যবহারের জন্য আরও প্রসারিত হয়। ২০০৮ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল হেরিটেজ কমিশন ও শ্রীরামপুর পুরসভা সংস্কারের কাজ শুরু করে, কাজ শেষ হল ২০২২ সালে।