ট্রায়ালের আগে স্বাধীনতা দিবসে করোনা ভ্যাকসিন! উঠছে প্রশ্ন
১৫ আগস্ট! মানে, হাতে দেড় মাসেরও কম সময়। আসন্ন স্বাধীনতা দিবসের মধ্যেই প্রথম ‘মেড-ইন-ইন্ডিয়া’ করোনা- প্রতিষেধক বাজারে এনে ফেলার স্বপ্ন দেখছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেই মর্মে ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা ভারত বায়োটেককে সরকারি ইচ্ছার কথা জানিয়ে চিঠি দিলেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) মহানির্দেশক বলরাম ভার্গব।
আইসিএমআরের সহযোগিতাতেই ভারত বায়োটেক প্রস্তাবিত প্রতিষেধকটি তৈরি করছে। নাম দিয়েছে কোভ্যাক্সিন। মানবশরীরে তার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) শুরুর অনুমতি সবে সোমবারই দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)। আর তার তিন দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার ভার্গব চিঠিতে লিখেছেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্ব মিটিয়ে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি প্রস্তাবিত এই করোনা-ভ্যাকসিন আসন্ন স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসীকে উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে।
শুক্রবার চিঠির বিষয়টি সামনে আসতেই দেশব্যাপী আলোড়ন পড়েছে। দেড় মাসের মধ্যে কোভিডের প্রতিষেধক দেশের বাজারে আসছে, এক দিকে এ নিয়ে যেমন আশা তৈরি হয়েছে দেশবাসীর একাংশের মধ্যে, তেমনই আবার আইসিএমআরের চরম উচ্চাকাঙ্ক্ষী চিঠির বয়ানে বিস্মিতও অনেকে। বস্তুত, দেশের কেন্দ্রীয় চিকিৎসা গবেষণা সংস্থার প্রধানের চিঠিতে হতবাকই বিশেষজ্ঞদের অনেকে। সে তালিকায় সামিল স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অনেক কর্তাও। বায়ো-এথিক্স নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসক অনন্ত ভানের প্রশ্ন, ‘একটি ট্রায়াল শুরুর আগেই যদি তার সাফল্য সম্পর্কে এতটা নিশ্চিত হয়ে যায় আইসিএমআর, তা হলে তো তা পক্ষপাতেরই সামিল!’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রস্তাবিত ভ্যাকসিনটি সবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন পেয়েছে। দু’পর্যায়ের সেই ট্রায়ালের জন্য ১৫ মাস সময় লাগবে বলে সংস্থার তরফেই নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে সিটিআরআই (ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস রেজিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া) ওয়েবসাইটে। দেশের এক ডজন শহরের ১২টি হাসপাতালে ১১২৫ জনের উপর দুই পর্যায়ের এই ট্রায়ালের প্রথমটি মাসখানেকের মধ্যে উতরে যেতে পারে।