দেশ বিভাগে ফিরে যান

শ্রদ্ধা হত্যাকান্ডের তদন্তে পুলিশের কাছে কী প্রমান আছে, কী নেই ? জেনে নিন

November 17, 2022 | 2 min read

ছবি সৌজন্যে: PTI

শ্রদ্ধা ওয়ালকরের চরম পরিণতি দেখে শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। দিল্লির অ্যাপার্টমেন্টে বান্ধবী শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে হত্যা করে, তার দেহ টুকরো টুকরো করেছিল অভিযুক্ত বছর ২৮-এর আফতাব। আজ দিল্লি আদালতে হাজির করা হবে আফতাব আমীন পুনাওয়ালাকে। পাঁচ দিন ধরে দিল্লি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে অভিযুক্ত। তদন্ত গোটাতে দিল্লি পুলিশ আরও সাত দিনের জন্যে আফতাবকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮মে শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন আফতাব পুনাওয়ালা। তারপর বান্ধবীর দেহ ৩৫ টুকরো করেন আফতাব। যদিও যে অস্ত্র ব্যবহার করে বান্ধবীর দেহ টুকরো টুকরো করেছিলেন, অভিযুক্ত তা এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ। শ্রদ্ধার দেহাংশগুলি মেহরাউলির জঙ্গলে ছতরপুরে তাদের অ্যাপার্টমেন্টের কাছে পাওয়া গিয়েছে। বান্ধবীর কাটা মাথাটি আফতাব কয়েকদিন ধরে ফ্রিজে রেখেছিল, যা এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

পুলিশের কাছে কী কী প্রমাণ রয়েছে?

আফতাবের স্বীকারোক্তি।
হত্যার ঠিক পরের দিন ১৯মে শ্রদ্ধার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংরক্ষণের জন্য আফতাব একটি নতুন ফ্রিজ কিনেছিলেন।
পুলিশের কাছে দোকান মালিকের বক্তব্য ও ফ্রিজ কেনার বিল রয়েছে।
দোকানদা থেকে আফতাব ছুরি কিনেছিল, সেই দোকানির কথায় পুলিশের সন্দেহ হত্যায় হয়ত ওই ছুরিটি ব্যবহার করা হয়েছে।
আফতাবের বাহুর ক্ষতর চিকিৎসা করা চিকিৎসক অনিল সিংয়ের জবানবন্দি রয়েছে।
জঙ্গলে পাওয়া দেহাংশগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
রান্নাঘরে পাওয়া রক্ত ​​ফরেনসিক পরীক্ষার জন্যে পাঠানো হয়েছে।
আফতাব-শ্রদ্ধার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫৪,০০০ টাকার লেনদেনের বিবরণ।
ফোন কলের রেকর্ড, ফোনের লোকেশন
শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ ওয়ালকরের সাক্ষ্য ও বন্ধুদের বক্তব্য।
আফতাবের অ্যাপার্টমেন্টে পাওয়া শ্রদ্ধার ব্যাগ।

পুলিশের কাছে এখনও যা নেই-

যে অস্ত্র বা ছুরি দিয়ে শ্রদ্ধার শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ কাটা হয়েছে, সেটা।
শ্রদ্ধার শরীরের বিভিন্ন অংশ এখনও অনুপস্থিত।

মঙ্গলবার পুলিশ আফতাবকে জঙ্গলে নিয়ে গেলে দেহের দশটি ব্যাগ পাওয়া যায়। কিন্তু ঘটনার দিন আফতাব ও শ্রদ্ধার পরা কাপড় পাওয়া যায়নি। আফতাব পুলিশকে বলেছে যে সে সিভিক গারবেজ ভ্যানে শ্রদ্ধার রক্তমাখা কাপড় ফেলে দিয়েছে। তা মেলেনি এখনও। শ্রদ্ধার মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি।

আফতাব পুলিশকে বলেছে, শ্রদ্ধার দেহাংশগুলি ফেলতে ১৮ দিনেরও বেশি সময় ধরে যে বনে যেত। কিন্তু তাকে কেউ দেখেনি। দক্ষিণ দিল্লির ছাতারপুরের অ্যাপার্টমেন্টে যাওয়ার তিন দিন পর আফতাব শ্রদ্ধাকে খুন করে বলে অভিযোগ। বাড়ির লোক আফতাবের সঙ্গে তার সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায়, শ্রদ্ধা নিজের পরিবারের সঙ্গে ঝামেলা করে, মার্চ মাসে মুম্বাই ছেড়ে চলে গিয়েছিল। শ্রদ্ধার বন্ধুদের দাবি, দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে তাদের সঙ্গে শ্রদ্ধার কথা হয়নি। এরপর শ্রদ্ধার বাবা অপহরণের অভিযোগ দায়ের করলে হত্যাকান্ডের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

ইতিমধ্যেই আফতাবের নারকো টেস্টের অনুমতি চেয়েছে দিল্লি পুলিশ। জঙ্গলে পাওয়া দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, আদৌ শ্রদ্ধার কিনা তা সুনিশ্চিত করতে, ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, রিপোর্ট আসতে আর ১৫ দিন সময় লাগবে। পুলিশ বিভিন্ন ফুটেজ নিয়েও অনুসন্ধান চালাচ্ছে। তিন বছর আগে ডেটিং অ্যাপ বাম্বলের সুবাদেই আফতাব এবং শ্রদ্ধার আলাপ হয়েছিল, সেই তথ্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও সাক্ষী না থাকায়, হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এখন ফরেনসিক রিপোর্ট, কল ডেটা ও পরিস্থিতিগত প্রমাণের ওপর নির্ভর করছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Delhi Police, #Murder Case, #sraddha walker, #aftab amin poonawalla, #evidence, #evidences

আরো দেখুন