সাম-দান-দণ্ড-ভেদ নীতিতে আর ফসল উঠছে না গেরুয়া ঘরে?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মনুসংহিতায় সাম দান দণ্ড ভেদ; এই চার নীতির কথা রয়েছে। সাম্রাজ্য বিস্তার, ক্ষমতা দখল, সমস্যা মেটানো যে কোনও কিছুর দাওয়াই এই চার নীতি। এর যথাযথ প্রয়োগ করেছিলেন স্বয়ং চানক্য। ভারতজুড়ে গেরুয়া শাসন কায়েম করার উদ্দেশ্যে বিজেপি নেতারা এই চার নীতি বেছে নিয়েছেন। দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের ভাইরাল হওয়া একটি কল রেকর্ডিয়েও এই চার নীতির কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছিল।
সাম দেখা গিয়েছে সম্প্রতি মেঘালয়ের ভোটে। কনরাড সাংমা সরকার নির্বাচন চালাকালীন বিজেপি বলে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ সরকার কিন্তু ভোটের ফলে দেখা গেল কনরাডের দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতার সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছেছে। সেই মুহূর্তেই বিজেপি মত পাল্টে, জোট গড়তে ছুটল এবং মেঘালয়ে সরকার তৈরিতে সাহায্য করল।
দান অর্থাৎ অর্থ। বিজেপি ভারতীয় রাজনীতিতে রিসর্ট পলিটিক্সের আমদানি করেছে। মধ্যপ্রদেশ থেকে মহারাষ্ট্র, সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেই বিজেপি অপারেশন লোটাস শুরু করে। ঘোড়া কেনবেচার মাধ্যমে পিছন দরজা দিয়ে তৈরি হয় সরকার। মোদী আমলে এমন অজস্র উদাহরণ রয়েছে।
দণ্ড হল শাস্তি। মোদী সরকার ও তার দলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ, বিরোধী দলের নেতাদের নাজেহাল করতে তারা ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাদের ব্যবহার করে। তৃণমূল থেকে তেজস্বী যাদব, কেজরীওয়াল থেকে কেসিআর সকলেই সেন্ট্রাল এজেন্সির সাঁড়াশি আক্রমণের শিকার। মামলার ফাঁসে ফাঁসিয়ে অবিজেপি দলের নেতাদের সরাসরি পদ্ম শিবিরে নিয়ে নেওয়ার কৌশল হিসেবেও বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থাদের সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে, অভিযোগ এমনই।
ভেদ হল বিদ্বেষ যা বিজেপির দীর্ঘদিনের হাতিয়ার। বিদ্বেষমূলক ভাষণ, সাম্প্রদায়িকতার তাস আর পাকিস্তান; এই তিন জিনিসে ভর করেই বিজেপি ক্ষমতায় বসে আছে।
বস্তুত বিজেপি উপলব্ধি করে ফেলেছে, মোদী ‘হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’ মিথ নয় বছরে ভেঙে খান খান হয়ে গিয়েছে। পিছনের দরজা গিয়ে সরকার গড়া, জনাদেশকে বুড়ো আঙুল দেখানো, ইডি-সিবিআইয়ের জুজু আস্তে আস্তে মানুষ সবটাই ধরে ফেলছেন। ফলে চব্বিশের আগে নতুন নীতি খুঁজতে ব্যস্ত মোদীর দল। তাই কি সঙ্ঘ মুক্ত ‘পাওয়ার সেন্টার’ গড়ার দিকে এগোচ্ছে মোদী সরকার?