গুড ফ্রাইডের ছুটিতে না হয় এবার কলকাতা শহরকে নতুনভাবে আবিষ্কার করলেন!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিশ্বব্যাপী খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা অত্যন্ত নম্রতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে উদযাপন করেন গুড ফ্রাইডে। ঈশ্বর পুত্রকে ক্রুশবিদ্ধ করা ও কবর দেওয়া হয়েছিল এদিন। খ্রীস্টান বিশ্বাস অনুসারে, যীশুকে গুড ফ্রাইডেতেই ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল এবং এর তিন দিন পরে তিনি আবার জেগে ওঠেন – যাকে ‘ইস্টার’ হিসাবে উদযাপন করা হয়।
বিশ্বের অনেক জায়গায় গুড ফ্রাইডেতে ঘোষিত সরকারি ছুটি। গুড ফ্রাই ডে উপলক্ষে রয়েছে টানা তিনদিন ছুটি। আর ক্যালেন্ডার দেখার পর থেকেই কি মনটা উড়ুউড়ু করছে? মনে হচ্ছে প্রিয়জন-পরিজনকে নিয়ে অথবা একা বেড়িয়ে আসি? অথচ পকেট পারমিট করছে না? দরকার নেই দূরে কোথাও যাওয়ার, চাইলে কলকাতা শহরটা নিজের মতো করে ঘুরে দেখতে পারেন। প্রতিদিনের ব্যস্ততায় হয়তো তা হয়ে ওঠে না। তাই এই সপ্তাহান্তের ছুটিতে কলকাতা শহরকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে পারেন।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দুই ভাবে আপনাকে আনন্দ দিতে পারে। এক হল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ভিতরে যে মিউজিয়াম আছে সেই মিউজিয়ামে ঢুকে নানান ঐতিহাসিক জিনিস দেখার মাধ্যমে। আর তার বাইরে যে সুন্দর সবুজ বাগান, সুন্দর জলাশয় এসব রয়েছে, সেই সবের মধ্যে আপনি অপার আনন্দ পাবেন। এখানে সকলে মিলে বসে সহজেই সময় কাটাতে পারেন। তবে যাওয়ার আগে অবশ্যই অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে দেখে নেবেন গুড ফ্রাইডেতে ওই মিউজিয়ামে আপনাদের ঢুকতে দেওয়া হবে কিনা!
ক্যাথিড্রাল চার্চ
কলকাতায় চার্চ বলতেই আগে মনে পড়ে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল চার্চ। সুন্দর করে সাজানো এই চার্চ এই শীতের সময়ের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। ভিক্টোরিয়ার ঠিক পিছনেই বলা যায় এই চার্চ। এই চার্চের ভিতরে গিয়ে বেঞ্চিতে খানিক চুপ করে বসতে পারেন। আমরা এই সময়ে সবাই তো খুব চিন্তিত ভিতরে ভিতরে, বেশ খানিক অশান্ত আমাদের মন। এই জায়গা আপনাদের মনে শান্তি এনে দেবে। আর চার্চের চারপাশটা, মানে যাকে ইংরাজিতে আমরা বলি প্রেমাইসেস, সেখানেও খানিক ঘুরতে পারেন। খুব সুন্দর লাগে এই সময়টা ওখানে।
আর বি আই মিউজিয়াম
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মিউজিয়াম এটি। আমাদের আজ অবধি কীভাবে অর্থনৈতিক নানা পরিবর্তন এসেছে, মুদ্রার কি পরিবর্তন হয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া কি গুরুত্ব পালন করেছে, সব নিয়ে এই মিউজিয়াম। খুব একটা কেউ কিন্তু আজও এখানে যান না। তবে গেলে কিন্তু আপনি অবাক হয়ে যাবেন। ইতিহাস আপনার সামনে জীবন্ত হয়ে উঠবে। কোনও এন্ট্রি ফি কিন্তু এখানেও নেই। আর বিবাদি বাগের কাছেই এটি। সুতরাং একবার ঘুরে আসতেই হবে।
প্রিন্সেপ ঘাট
আর বি আই মিউজিয়াম থেকে চলে যান প্রিন্সেপ ঘাট। প্রিন্সেপ ঘাটটি গঙ্গার ধারে অবস্থিত এবং নদীর তীরে দেখা যায়। এটি ১৮৪১ সালে বিশিষ্ট অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান পণ্ডিত এবং পুরাকীর্তি জেমস প্রিন্সেপের স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছিল। ডব্লিউ ফিটজেরাল্ড দ্বারা ডিজাইন করা স্মৃতিস্তম্ভটি এখনও কলকাতার শীর্ষ দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে। প্রিন্সেপ ঘাট থেকে গঙ্গা এবং দ্বিতীয় হুগলি সেতুর সুন্দর দৃশ্য মন ভাল করে দেয়। যে সমস্ত ভ্রমণকারীরা ঘুরতে চান তাদের বসার জন্য কাছাকাছি পর্যাপ্ত আসন রয়েছে এবং নদীর ধারে আরাম করুন। আপনি কাছাকাছি স্টল থেকে কিছু খাবর কিনে উপভোগ করতে পারেন।
পার্ক স্ট্রিট
অনেক হাঁটা হয়েছে, এবার তো খেতে হবে। খাওয়া মানে পার্ক স্ট্রিট। মোকাম্বো, মার্কোপোলো, টুংফং, পিটার ক্যাট, বারবি কিউ ন্যাশন কত নাম বলব! জ্যোমাটো দেখুন, ম্যানু ঠিক করুন আর ঢুকে যান।
তাহলে আর কী বেরিয়ে পড়ুন। পরিবার, প্রিয়জনের সঙ্গে ছুটি উপভোগ করুন।