ভিডিও কলে কথা হোক রোগী ও আত্মীয়দের, নির্দেশিকা রাজ্যের
রোগ ছড়ানোর আশঙ্কার প্রবল। চিকিৎসক বা নার্স ছাড়া স্বজনদের প্রবেশ নিষেধ COVID ওয়ার্ডে। এক মুহূর্তের জন্যও প্রিয়জনের দেখা না পেয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে কাটানো কষ্টের। অন্যদিকে, প্রিয়জনের শারীরিক অবস্থা জানতে উৎকণ্ঠায় ভুগছেন আত্মীয়রাও। তাঁদের সকলকে স্বস্তি দিতে জারি হল সরকারি নির্দেশিকা। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতিদিন করোনা রোগীর সঙ্গে আত্মীয়দের ভিডিও কলিংয়ের (Video Calling) মাধ্যমে কথা বলানোর ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই। শুধু তাই নয়, নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, রোগীর পরিবারের মানসিক চাপ কাটাতে প্রতিনিয়ত তাঁদের কাউন্সেলিং করতে হবে। এই মুহূর্তে আক্রান্তের শরীরের অবস্থা ঠিক কেমন, কতদিনে তিনি সুস্থ হবেন – এসব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে রোগীর পরিবারকে।
জনগণের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মহামারীর প্রভাব ইতিমধ্যেই মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার জন্য একদিকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ভয়, অন্যদিকে পরিবারের সদস্যকে হারানোর আশঙ্কায় ক্রমশ মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পরছেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। এও পরোক্ষে বড়সড় সমস্যাই।
করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় সরকারি প্রোটোকল ঠিকমতো মানা হচ্ছে কি না, তা দেখতে টিম গঠন করেছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। জেলার কোভিড হাসপাতালগুলি ঘুরে রিপোর্ট দিয়েছে সেই মনিটরিং টিম। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রোটোকল মানছে না বেশ কয়েকটি হাসপাতাল। তাই শুক্রবার প্রতিটি সরকারি কোভিড হাসপাতালের সুপার, বেসরকারি হাসপাতালের ডিরেক্টর অথবা সিইও এবং প্রত্যেক জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে নয়া নির্দেশনামা পাঠানো হয়েছে।
COVID পজিটিভ রোগী ও তাঁর আত্মীয়দের টেনশন এবং মানসিক চাপ কাটাতে নয়া নির্দেশিকায় ভিডিও কলিংয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সংক্রমণ ঠেকাতে কোভিড এবং নন কোভিড রোগীদের মধ্যে সঠিক সামাজিক দূরত্ব ঠিকমতো মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমন অনেক হাসপাতাল রয়েছে যেখানে করোনার সঙ্গে সঙ্গেই অন্যান্য রোগীদেরও চিকিৎসা চলছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই সমস্ত হাসপাতালের জরুরি বিভাগ-সহ ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, অন্য শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হলেও পরে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে রোগীর। এই সংক্রমণ ঠেকাতেই কড়া স্বাস্থ্য দপ্তর। করোনা রোগীর ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে, সকালে ভাল থাকলেও রাত্রের মধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে আকস্মিক মৃত্যু আসছে। এই আকস্মিক মৃত্যু ঠেকাতে প্রতিটি কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসকদের একটি টিম গঠন করতে বলা হয়েছে। টিমে থাকবেন ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ, বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট বিশেষজ্ঞ এবং একজন এন্ডোক্রিনোলজিস্ট। কোনও সময় রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত যেন এই টিম কাজ শুরু করতে পারে। এছাড়াও সামান্য শ্বাসকষ্টেই রোগীকে ভেন্টিলেশনে ঢুকিয়ে দেওয়ার বিকল্প হিসেবে হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত ভেন্টিলেশন নির্ভরতা অনেক ক্ষেত্রেই বিপদ ডেকে আনছে।