দেশ বিভাগে ফিরে যান

মণিপুরে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, জ্বলছে গ্রাম অথচ মুখে কুলুপ এঁটেছেন মোদী-শাহ

June 15, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মনমোহন সিং সরকারের সময় তৈরি হয়েছিল ‘পূবে তাকাও’ নীতি। নরেন্দ্র মোদী তাকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে করলেন ‘পূবে ঝাঁপাও’ (অ্যাক্ট ইস্ট) নীতি। সেই ‘পূব’ দিকের একটি ছোট্ট রাজ্য মণিপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ নরেন্দ্র মোদীর। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া তো দূরের কথা বরং আরও অবনতি হচ্ছে।

মঙ্গলবার গভার রাতে পূর্ব ইম্ফল এবং কাংপোকি জেলার সীমানায় অবস্থান করা খামেলোক এলাকার গ্রামে ঢুকে তাণ্ডব চালায় জঙ্গিরা। মহিলা-সহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

দু’দিন ধরে মণিপুরের বিভিন্ন সম্প্রদায় জানিয়ে আসছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে তারা রাজি নয়। এ জন্য নানা কারণও দেখিয়েছে তারা। শান্তি আলোচনায় বসার বিষয়টিকে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায় খারিজ করে দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মণিপুরে বড় ধরনের হিংসার ঘটনা ঘটল।

জঙ্গি মোকাবিলায় নিরাপত্তা বাহিনী ওই এলাকায় যাওয়ার পর বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয় বলে আজ বুধবার সকালে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে।

গত সোমবার সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই ও সংখ্যালঘু কুকি-যোমি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা ঘোষণা করেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক গঠিত শান্তি কমিটির কোনও শান্তি আলোচনায় তারা আর অংশ নেবে না।

এরপর গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে আবার হিংসা শুরু হয়। কীভাবে হিংসা থামানো যাবে, তা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দিশাহীন অবস্থায় পড়েছে। বিপুলসংখ্যক আধা সামরিক ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করেও রাজ্যের হিংসা থামানো যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার রাতে এতজন মানুষ প্রাণ হারানো নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে কেন্দ্র। বিরোধীদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ যে কোনও খুচখাচ বিষয় নিয়েও প্রতিনিয়ত টুইট করেন অথচ মণিপুরে এত মানুষ প্রাণ হারানোর পরও তাঁরা একটি শব্দও এবিষয়ে খরচ করছেন না! অথচ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিশ্লেষকদের মতে, মণিপুরের সীমান্তবর্তী মায়ানমারে যে গৃহযুদ্ধ চলছে, কার্যত সেটাই যেন ছোট আকারে দেখা যাচ্ছে মণিপুরে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নয়াদিল্লির ‘পূর্বে চলো’ নীতির সাবলীল অগ্রগতির জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সব রাজ্যে স্থিতিশীলতা দরকার। বিশেষভাবে প্রয়োজন মণিপুরকে শান্ত রাখা, যেহেতু এখান দিয়ে গেছে এশিয়ান হাইওয়ের প্রধান অংশ। মইতইদের প্রতি মণিপুরের জো জাতিগুলোর ক্ষোভের আঁচ মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডেও লাগবে। কারণ, তারাও বৃহত্তর জো জাতি। আবার সীমান্তের উল্টো দিকে মায়ানমারের চিন ও সাগাইনেও রয়েছে জো’রা। এ কারণে মণিপুরের অশান্তি পুরো এশিয়ান হাইওয়ে রুটকে ঝুঁকিতে ফেলবে।

উল্লেখ্য, জাতিগত হিংসায় জ্বলছে উত্তর-পূর্বের মণিপুর। সেই রাজ্যের বাসিন্দা কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। ভাঙচুর করা হয়েছে ধর্মীয় স্থান, স্কুলবাড়ি, সরকারি অফিসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্ফু জারির পাশাপাশি নামানো হয় সেনাকে।

এদিকে, রাজ্যে অব্যাহত হিংসার একটি নতুন দৃষ্টান্তে ইম্ফলে মণিপুরের একমাত্র মহিলা মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে । ইম্ফলের পশ্চিম জেলার ল্যামফেল এলাকায় শিল্পমন্ত্রী নেমচা কিপগেনের বাংলোকে বুধবার সন্ধ্যায় এই অগ্নিসংযোগের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।সূত্রের খবর, শ্রীমতি কিপগেন তখন বাড়িতে ছিলেন না৷

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #Amit shah, #Manipur, #Manipur burning, #Manipur violence

আরো দেখুন