পুজো স্পেশাল বিভাগে ফিরে যান

বাংলার দুগ্গা পুজো: আজ‌ও অমলিন শতাব্দী প্রাচীন গঙ্গাটিকুরির জমিদার বাড়ির পুজো

September 12, 2023 | 2 min read

শতাব্দী প্রাচীন গঙ্গাটিকুরির জমিদার বাড়ির পুজো

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গঙ্গাটিকুরির এই জমিদার বাড়িতে দেবী দুর্গা কন্যারূপে পূজিতা। লোকবিশ্বাস এই বাড়ির দেবী দুর্গা ভীষণ জাগ্রত। মন দিয়ে ডাকলে তাঁর সাড়া পাওয়া যায়।

গঙ্গাটিকুরি গ্রাম পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে অবস্থিত। এই গ্রামের জমিদার ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন রস সাহিত্যিক ও আইনজীবী। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম হাস্যকৌতুক ও ব্যঙ্গ রচনাকার ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচিত ছিলেন “পাচুঠাকুর” নামে । ১২৮৮ বঙ্গাব্দে গঙ্গাটিকুরি গ্রামে মহল্লা কিনে জমিদারি শুরু করেন ইন্দ্রনাথ। জমিদার বাড়িতে যৌথভাবে দুর্গাপুজো প্রচলিত হলেও তিনি পৃথকভাবে শুরু করেন দুর্গা পুজো। সেই দুর্গাপুজোকে ঘিরে ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক কাহিনী।

কথিত আছে, প্রায় ১২০ বছর আগে জমিদার ইন্দ্রনাথ বর্ধমান থেকে ঘোড়ার গাড়ি করে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়ে পথে দুই পুত্র কন্যা সমেত এক সুন্দরী বধূ তাঁর কাছে আশ্রয় চান। কন্যাস্নেহে তাঁদের গঙ্গাটিকুরির বাড়িতে নিয়ে যান ইন্দ্রনাথবাবু। কিন্তু বাড়িতে ফেরার পরেই পুত্র কন্যা-সহ সেই বধূ অদৃশ্য হয়ে যায়। রাতে স্বপ্নাদেশে সেই বধূ ৪ দিনের জন্য এই বাড়িতে থাকতে চান। তখনই ইন্দ্রনাথ বাবু বুঝতে পারেন মা দুর্গা তাঁর হাতে পুজো চাইছেন। এর পরেই নাট মন্দির তৈরির কাজ শুরু হয়। তৎকালে প্রায় ১০ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা খরচে আগ্রা থেকে মিস্ত্রি আনিয়ে বেলজিয়াম কাঁচ দিয়ে কারুকার্য করা হয়েছিল নাট মন্দিরের দেয়ালে।

এই জমিদার বাড়ির পুজো দেখতে দূর দুরান্ত থেকেও বহু মানুষের সমাগম হয়। পুজোর ৫ দিন বেলজিয়াম ঝাড়ের আলোয়, সানাই-এর রোশনাই ঝলমল করে ওঠে ইন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়ের হাতে তৈরি নাট মন্দির। মহা সমারোহে পূজিত হন মা দুর্গা।

বর্তমানে এই জমিদার বাড়ির উত্তরসূরীরা দেশ-বিদেশে থাকলেও এই বাড়ির সমস্ত সদস্যরা পুজোর কটা দিন বাড়িতে ফিরে আসেন। একটা সময় এই বাড়ির পুজোকে কেন্দ্র করে বিরাট মেলা বসত । গোটা সপ্তাহ জুড়ে চলত যাত্রাপালা। আজও এই বাড়িতে কন্যারূপে পূজিত হন দেবী দুর্গা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga Pujo, #Purba Bardhaman, #Gangatikuri, #Jamidar bari, #West Bengal

আরো দেখুন