UPSC পরীক্ষায় প্রথম ২০-র মধ্যে কলকাতার রৌনক এবং নেহা
এ রাজ্যের আমলা হিসেবেই দায়িত্ব পালন করতে চান রৌনক আগরওয়াল এবং নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা ইউপিএসসি পরীক্ষায় এ রাজ্য থেকে যথাক্রমে প্রথম এবং দ্বিতীয় হয়েছেন তাঁরা। রৌনকের সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক ১৩। আর নেহা সারা ভারতে ২০তম স্থান পেয়েছেন। মঙ্গলবার ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, হরিয়ানার সোনপতের কৃষক সন্তান প্রদীপ সিং সারা ভারতের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। তিনি অবশ্য ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস (আইআরএস)-এ অফিসার হিসেবে কর্মরত। এবছর ইউপিএসসিতে সফল হয়েছেন মোট ৮২৯ জন। রাজ্য তথা দেশের সফল পরীক্ষার্থীদের ট্যুইট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ রাজ্য থেকে ইউপিএসসিতে প্রথম ১৫-র মধ্যে বিগত কয়েক বছরে কেউ আসেননি। তাই রৌনকের এটা বড় সাফল্য। নোপানি স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন বিডন স্ট্রিটের বাসিন্দা এই মেধাবী ছাত্র। দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় বাণিজ্য শাখায় প্রথম হয়েছিলেন তিনি। এরপর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বি কম পাস করেন। সেখানেও দুর্দান্ত রেজাল্ট। তাঁর সাফল্যের দৌড় এখানেই থামেনি। চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সিতেও তাক লাগানো পারফরম্যান্স। তার জেরেই বেসরকারি সংস্থা থেকে ২১ লক্ষ টাকা চাকরির অফার আসে। কিন্তু দ্বাদশের পর থেকেই আইএএস হওয়ার স্বপ্ন লালন করতে শুরু করে দিয়েছিলেন রৌনক। তাতে চাকরি বাধা হয়ে দাঁড়াত বলে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। বরং, টিউশন করে নিজের প্রস্তুতির খরচ চালাচ্ছিলেন। প্রথম দু’বার ইউপিএসসি’র প্রাথমিক বাধা (প্রিলিমস)-ই পেরোতে পারেননি তিনি। কিন্তু হাল ছাড়েননি। তৃতীয়বারে একেবারে চূড়ান্ত সাফল্য। রাজ্যের মধ্যেই প্রথম।
রৌনক জানিয়েছেন, এ রাজ্যের শিল্প পরিকাঠামো আরও উন্নত করতে চান তিনি। তাই অন্য রাজ্যে যাওয়ার চিন্তা তাঁর মাথাতেও আসেনি। তাঁর বাবা রমাকান্ত আগরওয়ালও মনেপ্রাণে বাংলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরেই উত্তর কলকাতার একটি নামী পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে তিনি। যাদবপুরের নেহা কোনও টিউটর ছাড়া প্রস্তুতি নিয়ে একবারেই দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষার হার্ডল টপকে গিয়েছেন। প্রথমে কারমেল হাই স্কুল এবং পরে সাউথ পয়েন্টে পড়াশোনা করেন তিনি। এরপর পড়তে যান আইআইটিতে। তারপরে নয়ডায় একটি নামকরা সংস্থায় মোটা বেতনের চাকরি করছিলেন তিনি। কিন্তু মন পড়েছিল অন্যত্র। চাকরি সামলে নিয়ে গিয়েছেন সিভিল সার্ভিসের প্রশিক্ষণ। আর প্রথমবারেই বাজিমাৎ। এই বাঙালি তরুণী বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের ‘ক্যাডার’ হতে চেয়েই ইন্টারভিউয়ের সময় অপশন দিয়েছেন তিনি। তাঁর আশা, শেষ মুহূর্তে কোনও গণ্ডগোল না হলে এ রাজ্যেই আইএএস অফিসার হিসেবে কাজ করতে পারবেন তিনি।