পাঁচথুপি নবরত্ন শিবমন্দিরে পৌষ উৎসবে মাতলেন হাজার হাজার মানুষ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কান্দি মহকুমার বড়ঞা থানার পাঁচথুপি গ্রাম পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম একটি প্রাচীন ও বর্ধিষ্ণু গ্রাম। এই এলাকার উল্লেখযোগ্য দ্রষ্টব্য হল পঞ্চায়তন মন্দির। মন্দিরটি নবরত্ন শিবমন্দির নামে পরিচিত। কিন্তু বাংলায় নবরত্ন বলতে নয়টি চূড়াবিশিষ্ট মন্দিরকে বোঝায়। আদতে এই মন্দিরটি তেমন নয়। এই মন্দিরে নয়টি শিব প্রতিষ্ঠিত আছে বলে লোকমুখে এটি নবরত্ন শিবমন্দির নামে পরিচিত হয়েছে। আসলে এই মন্দিরটি একটি দুর্লভ পঞ্চায়তন রীতির মন্দির। পশ্চিমবঙ্গে মাত্র দুইটি এই রীতির মন্দির আছে, একটি পাঁচথুপিতে আর একটি বর্ধমান জেলার বৈকুণ্ঠপুরে।
তিনশো বছর আগে পাঁচথুপির জমিদার জগন্নাথ ঘোষহাজরা এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। একটি উঁচু বর্গাকার ভিত্তিবেদির উপর মাঝের মন্দিরটি একটি রেখদেউল, এর উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট ও দৈর্ঘ্যে ২ ফুট ও প্রস্থে প্রায় ১৬ ফুট। মূল মন্দিরের চারকোণে একই রকমের দেউল আকৃতির ছোট চারটি মন্দির আছে। মূল মন্দিরে পাঁচটি ও চারকোণের মন্দিরে একটি করে পাঁচটি মোট নয়টি শিবলিঙ্গ আছে। প্রধান দেউলের প্রবেশদ্বারে বিভিন্ন দেবদেবী, দশাবতারের মূর্তি ও লঙ্কাযুদ্ধের টেরাকোটা ভাস্কর্য আছে। ছোট মন্দিরগুলিতে শুধু ফুলবাড়ি নকশা আছে।
প্রতিবছরের মতো পৌষ উৎসবে মাতল পাঁচথুপি-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ। পাঁচথুপি নবরত্ন শিবমন্দিরে চলছে এই উৎসব। রবিবার পালা কীর্তন দিয়ে সূচনা হয়। সোমবার সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে হয় নগর কীর্তন। এরপর চলে মন্দিরে ভোগ নিবেদন। এদিন সন্ধ্যায় মহাপ্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা ছিল। মন্দির কমিটির দাবি, আট হাজার ভক্তদের জন্য প্রসাদের আয়োজন করা হয়। গত ২০ বছর ধরে পৌষ মাসের যে কোনও সোমবার দিন স্থির করে এলাকার মানুষ উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।
মন্দির কমিটির এক সদস্য বলেন, এতবড় উৎসবের আয়োজন করা হলেও কাউকে সাহায্যের জন্য বলা হয় না। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। মানুষের সাহায্য ও সহযোগিতায় প্রতিবার পৌষ উৎসব হয়ে আসেছে। শিব চর্তুদশীতে এলাকা ও দূরদূরান্ত থেকে মানুষ জল ঢালতে আসেন এই মন্দিরে। এছাড়া প্রতিবছর পৌষ উৎসব করে আসছে মন্দির কমিটি।