ধুবুলিয়া থেকে নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দিলেন মমতা, গরমকে টেক্কা দিয়ে স্বমহিমায় ৪৫ মিনিট বক্তব্যে কী বললেন তিনি?

পলাশির যুদ্ধে কৃষ্ণনগরের তৎকালীন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় ব্রিটিশদের অর্থাৎ লর্ড ক্লাইভের পক্ষ নিয়েছিলেন বলে ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে

March 31, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ছবি সৌজন্যে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুক

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচার আজ, রবিবার থেকে শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রথম জনসভার জন্য তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেছে নিয়েছিলেন নদিয়ার ধুবুলিয়াকে। কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar) তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) সমর্থনে প্রচার শুরু করলেন তিনি।

স্টিকিং প্লাস্টার খুলে ফেলে মঞ্চে। কপালে স্পষ্ট ক্ষতচিহ্ন। লেবু সবুজ পাড়ের হালকা সুতির সাদা শাড়ি। আঁচলে নীলবাড়ির তুঁতে নীল ছোঁয়া। সঙ্গে তাঁর চিরপরিচিত কনুই ছোঁয়া সাদা ব্লাউজ়। শেষ মার্চে হাঁসফাঁস করা গরমেও শাড়ির আঁচল জড়িয়ে গুঁজে নিয়েছিলেন কোমরে। যাতে উড়ে না যায়। হাতে ধূসর রঙের ব্যান্ডের স্মার্ট ওয়াচ। ৩৭ ডিগ্রির গরমকে টেক্কা দিল মমতার ৪৫ মিনিটের উত্তপ্ত বক্তৃতা। খেলা শুরু করলেন ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে। ছুটলেন মঞ্চময়।

প্রথম প্রচার থেকেই গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে বিজেপি প্রার্থী ‘রাজমাতা’ অমৃতা রায়ের পারিবারিক ইতিহাস তুলে প্রধানমন্ত্রীকেও খোঁচা দিতে ছাড়লেন না তিনি। মহুয়া মৈত্রকে পাশে নিয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগলেন মমতা।

ধুবুলিয়া সুকান্ত স্পোর্টিং ক্লাব মাঠের জনসভা থেকে মমতা বলেন, ‘মহুয়ার উপর কী অত্যাচার হয়েছে, দেখেছেন? ওকে লোকসভা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ ও জোর-জোরে কথা বলত, বিজেপির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলত বলে। ভোটে দাঁড়ানোর পরেও (অত্যাচার চলেছে)। ওর বাবা-মা বেচারা কিছু জানেন না। তাঁদের বাড়িতে গিয়েও রেড করে এসেছে। যেমন করে হোক, মহুয়াকেই হারানোই ওদের লক্ষ্য। মহুয়াকে জেতাবেন।’

পলাশির যুদ্ধে কৃষ্ণনগরের তৎকালীন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় ব্রিটিশদের অর্থাৎ লর্ড ক্লাইভের পক্ষ নিয়েছিলেন বলে ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে। সেই কথা তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধলেন মমতা। মোদীর উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, “উনি কি দেশের ইতিহাস ভুলে গিয়েছেন?” পারিবারিক ইতিহাস তুলে লোকসভায় বিজেপির কৃষ্ণনগরের প্রার্থী অমৃতা রায়কেও বেঁধেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, “রাজমাতা আবার কী! এখন আমরা সবাই প্রজা। প্রজার ভূমিকা পালন করুন। আর রাজা হলে রাজপ্রাসাদে থাকবেন। মিথ্যার আশ্রয় নেবেন না।”

এদিন সভায় বক্তৃতা দিতে উঠে উপস্থিত জনতাকে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাম নবমীর মতো এবারে অন্নপূর্ণা পুজোর পরের দিন দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করবে। সবাইকে বলব সতর্ক থাকুন। ইট মারলে পাটকেল মারবেন না। ভোটের বাক্সে দেখিয়ে দিতে হবে বাংলার গর্জন কী জিনিস।”

এরপরই মমতা বলেন, “বিজেপি ভোটের জন্য সব পারে। মতুয়া থেকে মুসলিম, হিন্দু সকলের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে। তাই সবাইকে সাবধান করলাম।” পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপিকে ইঙ্গিত করেই একথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্জিকা মতে, এবারে অন্নপূর্ণা পুজো হওয়ার কথা ১৬ এপ্রিল। রাজ্যের প্রথম দফার ভোটয় রয়েছে ১৯ এপ্রিল। মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, ভোটের আগে বাংলায় দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি করা হতে পারে।

সভামঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘এখানে আসতে গিয়ে আমি একটা পোস্টার দেখলাম। তাতে লেখা ‘সিএএ’ (ক্যা)। সিএএ নিয়ে ওরা একটা কমিটি তৈরি করেছে, তাতে সেন্সাসের লোকও আছেন। কেন সেন্সাসের লোক রেখেছে? ওদের মিথ্যা কথায় ভুলবেন না।’’ এর পরই মতুয়াদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, ‘‘মতুয়া ভাইবোনেরা, যাঁরা বিজেপির মিথ্যা কথায় ভুলছেন, ভাবছেন নিজেদের অধিকার পেয়ে গেলেন। পাসপোর্ট কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার দেয়। রাজ্য সরকার দেয় না। আমরা অত্যাচার করি না। অত্যাচার করে কেন্দ্র। আসলে সিএএ হল মাথা। তার ল্যাজা হল এনআরসি। সিএএ করলেই এনআরসিতে পড়ে যাবেন।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen