দেশ বিভাগে ফিরে যান

সুখবর, ১১০ কোটির জন্য আসছে কোভিড ভ্যাকসিন

November 20, 2020 | 2 min read

করোনা-কালে এই শব্দটি শুনতে মুখিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। বরং একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী। আর সেই আত্মবিশ্বাসের জোরে কোভিড ভ্যাকসিনের (Covid Vaccine) ১৬০ কোটি ডোজ কিনতে তৎপর কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই তিনটি বিদেশি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও করে ফেলেছে মোদি সরকার। তা হাতে এলে দেশের প্রায় ১১০ কোটি নাগরিক ভ্যাকসিন পাবেন। জনসংখ্যার নিরিখে ডোজ অনুপাতে দেওয়া হবে এই টিকা।

কিন্তু কতদিন চলবে এই প্রহর গোনা? সরকারি সূত্রের খবর, ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্যায়ের রেজাল্ট আসতে শুরু করেছে। প্রায় প্রতিটি ফলাফলই আশা দেখাচ্ছে কেন্দ্রকে। ফলে মহামারী রুখতে ভ্যাকসিন আর অধরা নয়। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। খুব বেশি হলে আগামী বছরের প্রথমার্ধ। তার মধ্যেই চলে আসবে প্রতিষেধক। আশাবাদী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধনও। বৃহস্পতিবার বণিকসভা ফিকির এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘আগামী তিন-চার মাসের মধ্যেই করোনার ভ্যাকসিন মিলবে। তার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি ও বিতরণের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে গিয়েছে।’

ভ্যাকসিনের যে ডোজ ভারত (India) সংগ্রহ করবে, দেশবাসীর জন্য বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকেও তা দেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছে কেন্দ্র। এটাই মোদি সরকারের নীতিগত অবস্থান। সফল ভ্যাকসিন এখনও বাজারে আসেনি ঠিকই, তার আগেই টিকা প্রস্তুতকারক ১৮টি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছে ৩০টি দেশ। তার মধ্যে রয়েছে ভারতও। এই খবর ট্যুইট করেন রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের সদ্য প্রাক্তন প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন।

এদিকে, মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ফাইজার জানিয়েছে, সব কিছু ঠিক মতো এগলে বড়দিনের আগেই তাদের ভ্যাকসিন বাজারে এসে যাবে। হিউম্যান ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্যায়ে এই টিকা ৯৫ শতাংশ নিরাপদ এবং কার্যকরী। রিপোর্ট ঩বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সেই মতো তারা আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছে জরুরিভিত্তিক প্রয়োগে অনুমোদন আদায় করতে চলেছে। তা মিললেই বাজারে এসে যাবে করোনার সর্বপ্রথম মার্কিন ভ্যাকসিন।

ভারতেও এই ভ্যাকসিন বিতরণে আগ্রহী ফাইজার। তবে কেন্দ্র ফাইজারের প্রতিষেধক নিয়ে খুব একটা উৎসাহী নয়। মূল কারণ, পরিকাঠামোগত সমস্যা। এই ভ্যাকসিন রাখতে হবে মাইনাস ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কোল্ড চেইন ব্যবস্থায়। তা ভারতে নেই। তাই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, নোভাভ্যাক্স এবং গামালেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে আপাতত ১৬০ কোটি ডোজ সংগ্রহ করবে বলেই ঠিক করে ফেলেছে কেন্দ্র। গামালেয়া তৈরি করছে স্পুটনিক ভি। আইসিএমআরের গবেষণাগারে রয়েছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন।

বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং আমেরিকার ডিউক গ্লোবাল হেলথ ইনোভেশন সেন্টারের উদ্যোগে তৈরি ‘দ্য লঞ্চ অ্যান্ড স্কেল স্পিডোমিটার’ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত এখনও পর্যন্ত অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের ৫০ কোটি, নোভাভ্যাক্সের ১০০ কোটি এবং গামালেয়ার থেকে ১০ কোটি ডোজ কিনতে চুক্তি করেছে। বিশ্বের মধ্যে এই প্রথম ভারতই ভ্যাকসিনের সর্বাধিক বরাত দিল। অক্সফোর্ড এবং গামালেয়ার ভ্যাকসিনের একটি করে ডোজ লাগলেও নোভাভ্যাক্সের দু’টি ডোজ দিতে হবে।

পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত না হলেও বিদেশে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন সফলভাবে কাজ করছে। চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল বিশ্লেষণের প্রাথমিক ফলাফল থেকে এমনই জানা গিয়েছে। কম বয়সিদের পাশাপাশি সত্তরোর্ধ্ব বয়ষ্কদের দেহেও এটি ভালো কাজ করছে। ভারতেও এই ভ্যাকসিন ঠিকমতো কাজ করবে বলেই আশাবাদী কেন্দ্র। সেটি তৈরি করছে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। ভারতে ১,৬০০ জনের উপর হিউম্যান ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্যায়ের টিকা দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন চলছে অন্তর্বর্তীকালীন বিশ্লেষণ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#India, #corona vaccine

আরো দেখুন