নজরদারির জন্য বাঘের গলায় রেডিও কলার
গতিবিধির উপর নজরদারি চালাতে ফের বাঘের (Tiger) গলায় পরানো হল রেডিও কলার। রবিবার সুন্দরবনের বসিরহাট রেঞ্জের হরিখালি বিটে একটি পুরুষ বাঘের গলায় এই বিশেষ যন্ত্র লাগিয়ে সেটিকে জঙ্গলে ছাড়া হল। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ডের (WWF) সহযোগিতায় রাজ্য বনদপ্তরের বন্যপ্রাণ শাখা এবং সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ (STR) কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এই কাজ হয়েছে। জঙ্গলে ছাড়ার পর বাঘটি কোথায় যাচ্ছে, কোথায় ঘুরছে, উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। উপগ্রহ চিত্রের তথ্য আসার পর সেগুলি পর্যালোচনা করে বাঘের বিচরণভূমি কীভাবে আরও ভালো করা যায়, সেবিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান মুখ্য বনপাল (বণ্যপ্রাণ) বিনোদকুমার যাদব।
২০১৪ সালে শেষবার এইভাবে বাঘের গলায় রেডিও কলার (Radio Collar) পরিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল। জানা গিয়েছে, সেবার কিন্তু খুব একটা সফল হয়নি সেই উদ্যোগ। তাই ফের একবার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কতটা এলাকাজুড়ে একটি বাঘ ঘোরাফেরা করে, তার স্বভাব-চরিত্রই বা কেমন, মানুষের সঙ্গে কোনও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে কি না এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল জঙ্গল ছেড়ে বাঘটি লোকালয়ে ঢুকছে কি না— মূলত এই বিষয়গুলিই বনদপ্তরের কর্তারা দেখতে চাইছেন। তাঁদের কথায়, উপগ্রহের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা বাঘটির উপর নজরদারি চালানো হবে। লোকালয়ে ঢোকার কোনও খবর মিললে, সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে সতর্ক করে দেওয়া হবে।
যে বাঘটিকে এই উন্নত প্রযুক্তির কলার পরানো হয়েছে, সেটিকে কিছুদিন আগে জঙ্গলের কাছ থেকে ধরা হয়েছিল। মূলত যে এলাকা থেকে তাকে ধরা হয়, তার থেকে কিছুটা দূরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এদিন। বাঘটিকে ছাড়ার সময় সেখানে বনদপ্তরের কর্তারা ছাড়া সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বলেন, ‘বনদপ্তর সবসময় প্রযুক্তির সাহায্যে সুন্দরবনের জীববৈচিত্রের পর্যালোচনা করার প্রতি জোর দিয়ে এসেছে। এই উদ্যোগ বাঘেদের সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে জঙ্গলের ভিতরের নানা অজানা তথ্যও প্রকাশ করবে।’
তবে একটি বাঘের গলায় এই যন্ত্র পরিয়েই ক্ষান্ত থাকতে নারাজ বনদপ্তর। আগামী দিনে আরও তিনটি বাঘকে রেডিও কলার পরিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।