করোনা-জয়ীদের রক্তে চিকিৎসার খোঁজ
বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একশো ছুঁইছুঁই। এই অবস্থায় করোনা-জয়ীদের রক্ত দিয়ে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। লক্ষ্য, কোভিড-১৯ থেকে যাঁরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাঁদের রক্তের মধ্যে থাকা অ্যান্টিবডিকে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় কাজে লাগানো।
বুধবার নবান্নে এ কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এর জন্য করোনা-জয়ীদের রক্তের মধ্যে থাকা প্লাজমা ব্যবহার করা হবে।’ তাঁর আশা, করোনার প্রকোপ ঠেকাতে এই পদক্ষেপ কার্যকর হবে বাংলায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ৭১ জন। তিন জন সুস্থ হয়ে ওঠায় এ দিনই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয় আইডি থেকে। এই নিয়ে হাসপাতাল থেকে মোট ১৬ জন ছাড়া পেলেন সুস্থ হয়ে। রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় আরও দু’জন অচিরেই ছুটি পাবেন ওই হাসপাতাল থেকে।
বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন করোনা টাস্ক ফোর্সের সদস্য চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় ও অভিজিৎ চৌধুরী। সুকুমার জানান, বাংলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলার এক সপ্তাহের মাথাতেই লকডাউন চালু হয়ে যাওয়ায় কোভিড-১৯ এ রাজ্যে অন্যান্য রাজ্যের মতো ছড়ায়নি। তাই রাজ্যবাসীর স্বার্থেই আরও কিছু দিন এই বিধিনিষেধ মেনে চলার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।
কোভিড-১৯ চিকিৎসায় করোনা-জয়ীদের রক্তের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সম্পর্কে অভিজিৎ বলেন, ‘করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের শরীরে থাকা অ্যান্টিবডি যে এই নভেল করোনাভাইরাসকে নিকেষ করার উপযোগী, তার প্রমাণ ওই রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠা। এ নিয়ে মার্কিন মুলুকের একাধিক গবেষণায় ভালো ফল মিলেছে। এই চিকিৎসা অনুমোদন করেছে মার্কিন ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাও। স্বাস্থ্য দপ্তরের এথিক্স কমিটির অনুমোদন নিয়ে আমরাও এই চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করতে আগ্রহী।’
অভিজিৎ জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) আমন্ত্রণে এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকরা কোভিড-১৯ চিকিৎসার গবেষণায় যোগ দিতে চলেছেন। সলিডারিটি নামে হু-র যে বিশ্বব্যাপী ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে, তাতে অংশগ্রহণ করবেন অভিজিতের নেতৃত্বে আরও দুই শিক্ষক-চিকিৎসক (ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বিভূতি সাহা ও সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ যোগীরাজ রায়)। আইডি হাসপাতালে হওয়া সেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য তাঁরা পাঠাতে থাকবেন সলিডারিটি প্রকল্পের ভারতীয় নোডাল এজেন্সি, আইসিএমআরের অধীন পুনের সংস্থা ন্যাশনাল এইডস রিসার্চ ইনস্টিটিউটে।