রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

যৌনকর্মী, রূপান্তরকামীদের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী

April 12, 2020 | 2 min read

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে কাজ হারানো যৌনকর্মী, রূপান্তরকামীদের মতো মানুষের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘কলকাতায় কিছু ট্রান্সজেন্ডার আছে, লিটল স্টার আছে, যৌনপল্লি এলাকা আছে। বহু মেয়ে ওখানে কাজ করে দিনযাপন করেন। আমি কিছু স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে আগেই সাহায্য করেছি। দেখতে হবে যাতে যৌনকর্মীরা রোজ খাবার পান।’ বিষয়টি সুনিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি। কলকাতা পুলিশকেও বিষয়টি দেখার জন্য বলেন। রূপান্তরকামীরাও যাতে খাবার পান, তা দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

যৌনকর্মী, রূপান্তরকামীদের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী সংগৃহীত চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন এই প্রান্তিক মানুষরা। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের যৌনপল্লিগুলিতে খদ্দেরের ভিড় কমে যায়। লাটে ওঠে পেশা। ভ্রাম্যমাণ যৌনকর্মীরা পল্লিতে আসা-যাওয়া বন্ধ করলেও যাঁরা পাকাপাকি পল্লিতেই থাকেন, তাঁরা পড়েন বিপাকে। আয় নেই অথচ খরচ বহু। ঘরভাড়া থেকে শুরু করে অন্ন জোগানো। এই পরিস্থিতিতে যৌনকর্মীদের পাশে দাঁড়ায় রাজ্য সরকার ও যৌনকর্মীদেরই সংগঠন দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি।

গত ৩০ মার্চ সোনাগাছিতে গিয়ে কাজ হারানো যৌনকর্মীদের হাতে চাল, ডাল, আলু, আটা তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। ৩১ মার্চ থেকে প্রান্তিক মহিলা ও শিশুদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও করেন শশী। দুর্বারের সচিব কাজল বোস মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় আপ্লুত। শনিবার তিনি বলেন, ‘রাজ্যের একজন মুখ্যমন্ত্রী যৌনকর্মীদের কথা বলছেন, এটা আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি। উনি অবশ্য আগেও যৌনকর্মীদের পাশে থেকেছেন। ওঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য যৌনকর্মীদের নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।’ ঘটনাচক্রে শনিবারই দুর্বারের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়।

যৌনকর্মীদের হাতে চাল, ডাল, আলু, আটা তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা সংগৃহীত চিত্র

এই মুহূর্তে সোনাগাছিতে হাজার দুয়েক যৌনকর্মী রয়েছেন, যাঁরা দু’বেলা দু’মুঠোও জোগাতে পারছেন না। বৌবাজার, কালীঘাট, চেতলা, খিদিরপুর মিলিয়ে সংখ্যাটা আরও এক হাজার। গোটা রাজ্য মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার। কাজলরা মনে করছেন, আগামী অন্তত তিন মাস পল্লিগুলিতে পেশা বন্ধ রাখতে হবে। একজনের সংক্রমণ হলে গোটা পল্লির বিপদ। দুর্বার অনলাইনে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিল। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এ পর্যন্ত এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জমা পড়েছে তহবিলে।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন রূপান্তরকামীরাও। রূপান্তরকামী আন্দোলনের মুখ রঞ্জিতা সিনহা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে আমাদের জন্য ভেবেছেন, তার জন্য তাঁকে কুর্নিশ জানাই। তবে রাজ্যে ট্রান্সজেন্ডার বোর্ড রয়েছে, তারা লকডাউনের শুরুতেই কেন কিছু ভাবল না?’ শুক্রবার রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও শশী পাঁজা রূপান্তরকামীদের মধ্যে চাল, ডাল, আলু, মুড়ি, বিস্কুট, সাবান বিলি করেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #transgender, #sex worker

আরো দেখুন