আইভারমেক্টিন সংক্রমণের তীব্রতা কমায়, তবে করোনা আটকাতে পারে না
শোহন-এর সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘এসো কথা বলি’। আমাদের এই সময়ের সভ্যতার মুখ ও মুখোশ কতটা কথার কথা মাত্র সেটাই বড় নির্মম ভাবে বিঁধে থাকে এ নাটক (Drama) দেখার পরে। গল্প সামান্যই। সচ্ছল পরিবারের দুই অভিভাবকের এর সন্ধ্যার পারষ্পরিক আলোচনা। ব্যবসায়ী নীলাঞ্জনের ছেলেকে খেলতে গিয়ে মেরে দাঁত ভেঙে দিয়েছে আইনজীবী কুনালের ছেলে। তাই কুনাল ও তার স্ত্রী শ্রেয়াকে ডেকে আলোচনায় বসেছে নীলাঞ্জন আর তার স্ত্রী সভ্যতার গবেষক স্বাতী। ছোটদের মধ্যে কেন এই হিংসা চারিয়ে গেল এখনই, এর সমাধান কী? এমনই সব সুনাগরিক সহিষ্ণুতার কথাবার্তা দিয়ে শুরু হয় আলোচনা। কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ এমনকী গালিগালাজ পর্যন্ত ব্যাপারটা গড়ায়। সমাধান মেলে না কিছুই। মিলবে না যে, সে কথাটা অবশ্য প্রথমেই বুঝিয়ে দিয়েছিল অনাহুত বিগ বস। প্রায় বিবেকের মতো সে মাঝে মাঝেই উপস্থিত হয় এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত এই শ্রেণিটির অন্তঃসারশূন্যতাকে নিম্নবিত্ত কী চোখে দেখে সেটাই জানান দেয় চোখা সংলাপে। চরিত্রগুলোর সাদা-কালো কিংবা ধূসর জায়গাগুলোও এমন এক বুনোটে সংলাপে সাজিয়েছেন নাট্যকার অনীশ ঘোষ।
ফরাসি-ইহুদি লেখিকা ইয়াসমিনা রেজার ‘গড অব কারনেজ’ অবলম্বনে এই নাটক লেখা। হাসির আড়ালে তীব্র বিদ্রুপ রেজার নাটকের বৈশিষ্ট্য। ছোটগল্পের সঙ্গে রেজার নাটকের রূপগত মিল সবচেয়ে বেশি। সংলাপ-ভিত্তিক এই নাটকে হাসি ও কান্না, শান্তি ও ঝগড়া কঠিন বাঁধনে মাপা।
অভিনয়ে স্বাতীর চরিত্রে বিদীপ্তা চক্রবর্তী (Bidipta Chakraborty) সবচেয়ে বেশি মনে রাখার মতো। নীলাঞ্জনের চরিত্রে অনীশ যথাযথ। একটি মুহূর্তে তাঁর অভিব্যক্তিগত অভিনয় ভোলার নয়। টেনশন থেকে শ্রেয়া (অপরাজিতা ঘোষ) যখন স্বাতীর বইগুলোর ওপর বমি করে ফেলে, সেগুলো পরিষ্কার করার সময় অনীশ যে শান্ত তীব্রতায় বলেন, ‘সিভিলাইজেশন অ্যান্ড এথিকস’ বইটার ওপর একটু বেশি করে স্প্রে করো সেই মুহূর্ত স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কুণালের ভূমিকায় শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিগ বসের পার্থ গুপ্ত যথেষ্ট ভাল অভিনয় করেছেন। জয় সেনের আলো, দেবাশিসের মঞ্চ যথাযথ। আবহে গৌতম ঘোষ।