আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’, করোনা বিধিনিষেধে কিছুটা ছাড় দিল সরকার
ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর আশঙ্কায় কঠোর বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, মূলত চাষবাসের ক্ষেত্রে যাতে ক্ষতির মুখে পড়তে না হয়, সেজন্য সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজের বিষয়টিও মাথায় রেখে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
কোন কোন ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে?
১) বীজ, সার, রাসায়নিক এবং কৃষির কাজের ব্যবহার যন্ত্রপাতি কেনাবেচা-সহ কৃষি, হর্টিকালচার, ফুলচাষ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজে ছাড় দেওয়া হয়েছে। সেই সংক্রান্ত পরিবহন, মজুতের ক্ষেত্রেও মিলবে ছাড়।
২) জরুরি ভিত্তিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, প্রাক-বর্ষার জরুরি কাজ-সহ গ্রামীণ উন্নয়নের কাজেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।
মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর অবস্থান করছে। পোর্ট ব্লেয়ারের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে ৫৬০ কিলোমিটার, পারাদ্বীপের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে ৫৯০ কিলোমিটার এবং দিঘার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ৬৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে সেই গভীর নিম্নচাপ। তা আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হবে। তারপর সোমবার সকালের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে সেটি। সেখান থেকে যশ আরও শক্তিশালী হয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হবে। তারপর অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বুধবার সন্ধ্যায় ওড়িশার পারাদ্বীপ এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরের মাঝখান দিয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে।
তাহলে কী কী বিধিনিষেধ থাকছে?
১) স্কুল, কলেজ-সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
২) বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দফতরগুলি খোলা থাকবে।
৩) শপিং, মল, মার্কেট কমপ্লেক্স, স্পা, বিউটি পার্লার, সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ, সুইমিং পুল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স বন্ধ থাকবে।
৪) সকাল ৭ টা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত শাক-সবজি, ফল, মুদিখানা, মাংস, ডিম, পাউরুটির সঙ্গে যুক্ত খুচরো দোকান এবং বাজার খোলা থাকবে। সকাল ১০ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে। বেলা ১২ টা থেকে দুপুর ৩ টে পর্যন্ত সোনা ও শাড়ির দোকান খোলা থাকবে। ওষুধের দোকান, চশমার দোকান সাধারণ সময়মতো খোলা থাকবে।
৫) লোকাল ট্রেন বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়ল। আগামী ৩০ মে পর্যন্ত রাজ্যে লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে বাস চলাচল। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। কলকাতা মেট্রো চলবে না। সবই রাজ্যের মধ্যে পরিষেবার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
অটো চলাচল বন্ধ থাকবে। ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব চলাচল বন্ধ থাকবে। কার্যত সবরকমের গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকছে। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়ি, চিকিৎসা, সংবাদমাধ্যম, হাসপাতাল, ক্নিনিক, টিকাকরণ কেন্দ্র, বিমানবন্দর থেকে গাড়ি, টার্মিনাল পয়েন্ট থেকে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এবার কৃষি, হর্টিকালচার, ফুলচাষ সংক্রান্ত পরিবহনেও ছাড় মিলবে।
৬) রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক – সবরকম জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা।
৭) ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে। তবে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত কাজ চলবে। এটিএম পরিষেবা মিলবে।
৮) বিয়েবাড়িতে সর্বাধিক ৫০ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন। সৎকারে সর্বাধিক ২০ জন থাকতে পারবেন।
৯) রাত ন’টা থেকে সকাল পাঁচটা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে সবরকম গতিবিধিতে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।