তৃণমূলে সবাই সমান, বড় চেয়ার সরিয়ে বার্তা মমতার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেন, তাঁর দলে সবাই সমান। তৃণমূল কংগ্রেস মা-মাটি-মানুষের দল। এখানে তিনিও যা, বুথ স্তরের একজন কর্মীর গুরুত্বও তেমন। কোনও ফারাক নেই।
শুক্রবার বিকেলে তৃণমূল ভবনে মুকুল রায়ের ‘ঘরওয়াপসি’র সাংবাদিক বৈঠকে চেয়ার সরিয়ে দিদি বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, দলে তিনি আলাদা নন। সবার মতোই।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকের আগে সেজে উঠেছিল তৃণমূল ভবনের প্রেস কর্ণার। চারদিকে প্লাস্টিকের কালো চেয়ারের মাঝে রাখা ছিল একটি লম্বা বিরাটাকার কাঠের চেয়ার। মস্ত হাতল তার। কাঁধ উঁচু সেই চেয়ারের উপরে বিছিয়ে রাখা ছিল ধবধবে সাদা তোয়ালে। সেখানে এসে নেত্রীর বসার কথা ছিল।
কিন্তু প্রেস কর্ণারে ঢুকেই সেই চেয়ার সরিয়ে দেন তৃণমূলনেত্রী। বলেন, “এই এত বড় চেয়ার রেখেছ কেন? এটা সরিয়ে দাও! ওই যে ওইরকম চেয়ার নিয়ে এসো!” এরপরই তৃণমূল ভবনের কর্মীরা চেয়ার বদল করে দেন। কাঠের বড় চেয়ার সরিয়ে আনা হয় প্লাস্টিকের কালো চেয়ার। যেমন চেয়ারে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায়, শুভ্রাংশু রায়রা বসেছিলেন।
প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের ভোট কৌশলী হয়ে আসার পর থেকেই সাংবাদিক বৈঠকে একটা পরিপাটি ভাব দেখা যায় তৃণমূল ভবনে। সময়ান্তরে ব্যাকড্রপ বদলে যাওয়া, এলইডি লাইট—সব কিছুর মধ্যেই একটা পেশাদার ব্যাপার। এদিনও তেমনই ছিল ছবিটা। কিন্তু এদিন নিজের জন্য বিশেষ চেয়ার সরিয়ে সাধারণ চেয়ারে বসে মমতা আসলে মুকুল রায়কে সতীর্থের মর্যাদা দিতে চাইলেন বলেই মত পর্যবেক্ষকদের।
সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তাহলে কি আপনি এবার তৃণমূলের সেকেন্ড ম্যান? জবাবে তরুণ নেতা বলেছিলেন, তৃণমূলে সেকেন্ড ম্যান বলে কেউ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেত্রী। বাকি সবাই কর্মী। কিন্তু এদিন যেন মমতা বোঝাতে চাইলেন, তিনিও আলাদা নন। ‘আমি তোমাদেরই লোক।’ বার্তা দিতে চাইলেন, একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে কিংবা ভোট প্রচারের সময় তিনি যেমন বারবার করে দলে সকলের সমান সম্মানের কথা বলেন, তা কেবল কথার কথা নয়। এটা তাঁরও নিয়মিত অনুশীলনের মধ্যে রয়েছে।