দোকান খুলবে কোথায়, আজ নির্দেশিকা রাজ্যের
দোকান খোলা রাখা নিয়ে আজ, বুধবার নির্দেশিকা প্রকাশ করবে রাজ্য সরকার। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তা জানায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তাই রাজ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আজ বিকেলে নবান্ন সভাঘরে করোনা নিয়ে গঠিত মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হবে। তবে কনটেইনমেন্ট জোনে সব দোকান খুলুক, তা চায় না রাজ্য। ওই জোনে শুধুমাত্র ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দোকানই খোলা থাকবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
লকডাউন নিয়ে কেন্দ্র এখনও কোনও চূড়ান্ত মত ঘোষণা করেনি। তবে সোমবার ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথাবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, লকডাউনের সময়সীমা বাড়তে পারে। যদিও তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাও বুঝিয়ে দিয়েছেন, ৪ তারিখ থেকে সব উঠে যাবে, তা হবে না। এমনটা হলে তো সব দোকান খুলে যাবে, রাস্তায় মানুষ নেমে যাবে। তখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তাই আমরা গ্রিন, অরেঞ্জ এবং রেড জোনের জন্য আলাদা নির্দেশিকা তৈরি করছি। আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লার সঙ্গে টেলিফোনে এ বিষয়ে কথা বলেছি। সাতটি রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি। তাই আমরা ঠিক করেছি, দোকান খোলার ব্যাপারে একটি সুচিন্তিত নির্দেশিকা প্রকাশ করা হবে। বৈঠকের পরেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। প্রতিটি জোনের জন্য পৃথক গাইডলাইন ঘোষণা হবে। তবে গ্রিন ও অরেঞ্জ জোনের জন্য কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হতে পারে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী নয়, যেমন ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যালস, কসমেটিকস প্রভৃতি পণ্য অনলাইনে কেনাবেচার অনুমতি দিচ্ছে রাজ্য। যদিও মদ বিক্রি নিয়ে সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। কারণ এ ব্যাপারে কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
মুখ্যসচিব এদিন জানিয়েছেন, কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর রেড জোনের মধ্যেই রয়েছে। এর মধ্যে কলকাতার ২২৭টি, হাওড়ার ৫৬, উত্তর ২৪ পরগনার ৫৭ এবং পূর্ব মেদিনীপুরের আটটি এলাকাকে কনটেইনমেন্ট জোন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই এলাকাগুলিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান ছাড়া অন্য কোনও দোকান খোলা যাবে না বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, গ্রিন জোনে রয়েছে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দুই দিনাজপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম এবং ঝাড়গ্রাম জেলা। এই আটটি জেলায় বেশ কিছু ছাড় দিতে চলেছে রাজ্য। তবে রেড জোনে কড়াকড়ি থাকবে আগের মতোই। অরেঞ্জ জোনে রয়েছে ১১টি জেলা। যেখানে অল্প সংখ্যক করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। ১০ জন ছাড়া পেয়েছেন। এদিন পর্যন্ত ৫২২ জন আক্রান্ত রোগী রয়েছেন রাজ্যে। আর মৃতের সংখ্যা ২ জন বেড়ে মোট দাঁড়াল ২২। এ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১১৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৮০ জন সহ সব মিলিয়ে ১৩,২২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। নতুন আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৭৫ শতাংশই কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার। বাকি ২৫ শতাংশ হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। এদিন পর্যন্ত প্রায় ৫ লক্ষ পিপিই এবং তিন লক্ষ এন ৯৫ মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে ২৫ হাজার ফেস শিল্ড দেওয়া হচ্ছে। কনটেইনমেন্ট জোনকে বাদ দিয়ে ২৪১৯টি কারখানা খোলার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার।