‘ডবল ইঞ্জিন’ অসমে জল দূষণ দেশে সর্বাধিক
‘ডবল ইঞ্জিন’ অসমে জলে দূষণ মাত্রাছাড়া। রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার প্রায় ২১ হাজার জনবসতিতে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত দূষিত জল, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বাধিক। অন্যদিকে, সারা দেশের নিরিখে এই সংক্রান্ত পরিস্থিতি তুলনায় কিছুটা ভালো হওয়া সত্ত্বেও জল জীবন মিশনের মতো কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মসূচির আওতায় বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশকে ২০২১-২২ আর্থিক বছরে সবথেকে বেশি বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার লোকসভায় তথ্য দিয়ে লিখিতভাবে এ কথা জানিয়েছে জলশক্তি মন্ত্রক।
এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, পানীয় জলে দূষণের ক্ষেত্রে প্রধানত আর্সেনিক, ফ্লোরাইড, আয়রন, নাইট্রেট, ভারী ধাতু এবং জলে লবণের পরিমাণকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। লোকসভায় পেশ করা সেটিই উল্লেখ করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক। গত ২৬ জুলাই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেশজুড়ে জল দূষণের উল্লিখিত পরিসংখ্যান পেশ করেছে জলশক্তি মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী প্রহ্লাদসিং প্যাটেল। তাতেই দেখা যাচ্ছে, বিজেপি শাসিত অসমের গ্রামীণ এলাকার মোট ২০ হাজার ৯৫৫টি জনবসতি জল দূষণের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৭৪৪টি বসতিতেই মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত আয়রন। রাজ্যের ১ হাজার ১৯৪টি গ্রামীণ জনবসতির জলে মিলিছে মাত্রাছাড়া আর্সেনিক, যা রীতিমতো উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল।
অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশের গ্রামীণ এলাকার এমন মোট ৫৪৯টি জনবসতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে জলের দূষণ মাত্রাছাড়া। এর মধ্যে জলে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকা জনবসতির সংখ্যাই বেশি। উত্তরপ্রদেশের গ্রামীণ এলাকার ১২৪টি জনবসতিকে আর্সেনিক কবলিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, অসমের তুলনায় উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো। এমনকী সারা দেশের নিরিখে এক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ বেশ কিছুটা এগিয়েই রয়েছে। অন্তত লোকসভায় পেশ করা জলশক্তি মন্ত্রকের তথ্যেই তা স্পষ্ট। অথচ জল জীবন মিশনের আওতায় সেই উত্তরপ্রদেশকেই দেওয়া হয়েছে সবথেকে বেশি অর্থ।
এদিন লোকসভায় জলশক্তি মন্ত্রক যে তথ্য পেশ করেছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২১-২১ আর্থিক বছরে জল জীবন মিশনের আওতায় উত্তরপ্রদেশকে ১০ হাজার ৮৭০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অসম পেয়েছে ৫ হাজার ৬০১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ওই কর্মসূচিতে পশ্চিমবঙ্গের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দের পরিমাণ ৬ হাজার ৯৯৮ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা। যদিও সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মসূচি জল জীবন মিশনের একটি অংশমাত্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদসিং প্যাটেল লোকসভায় লিখিতভাবে জানিয়েছেন, জল জীবন মিশনের আওতায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দের দু’শতাংশ পর্যন্ত অর্থ সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি ‘ওয়াটার কোয়ালিটি মনিটরিং অ্যান্ড সার্ভেলেন্স’-এর মতো কাজে ব্যবহার করতে পারে।