ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি
ঘাটাল (Ghatal) মহকুমার বন্যা (Flood) পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। শুক্রবার মহকুমার বিভিন্ন এলাকার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, হুমায়ুন কবীর ও শিউলি সাহা। এদিন তাঁরা প্রথমে ঘাটাল মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে একটি বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বন্যায় মৃত দু’জনের পরিবারের হাতে দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন।
মানসবাবু এদিনও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দেওয়ায় এই মাস্টার প্ল্যানের কাজ হচ্ছে না। তবুও রাজ্য সরকার সাধ্যমতো নিজেদের খরচে খালগুলি সংস্কারের ব্যবস্থা করছে।
এদিন প্রশাসনিক বৈঠকের পর মন্ত্রীরা নৌকায় করে ঘাটাল ব্লকের মনশুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শোনেন। তাঁদের হাতে ত্রাণ সামগ্রীও তুলে দেন। বিকেলে তিন মন্ত্রী দাসপুর ব্লকের নাড়াজোল এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। বিধায়ক তথা তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি নাড়াজোলে বন্যা কবলিত মানুষদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, স্থানীয় নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী সবাই আপনাদের পাশে রয়েছেন। তাই এই সাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা করবেন না।
গ্রাম পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ ও রাজ্য সমস্ত স্তর থেকেই আপনাদের সমস্যাগুলি আন্তরিকতার সঙ্গে সমাধান করার চেষ্টা করবে। প্রসঙ্গত, ঘাটাল মহকুমায় দ্রুতগতিতে বন্যার জল কমছে। তবে এখনও বহু রাস্তা ও বাড়ির মধ্যে জল রয়েছে। কিছু জায়গায় পানীয় জলের তীব্র সঙ্কটও চলছে। বহু এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এনিয়ে সাধারণ মানুষদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ৩০ জুলাইয়ের পর থেকে ঘাটাল মহকুমায় ৪৭৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ৬১ হাজার ৮৫১টি। সম্পূর্ণ বাড়ি ক্ষতি হয়েছে ১১৫৩টি, আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১১ হাজার ৪৬১টির। শুক্রবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। ৫৬৮টি মৌজার কৃষি জমির ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে আমন ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে ২ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমির। ২০ হাজার ৮৩ হেক্টর জমির রোয়া ধান নষ্ট হয়েছে। সেই সঙ্গে ১ হাজার ৮৫৫ হেক্টর সব্জি, ৩৯০ হেক্টর পাট, ৪৫ হেক্টর ফুলচাষের জমি ক্ষতি হয়েছে। মানসবাবু বলেন, বন্যার জল নামলে প্রকৃত ক্ষতি নির্ণয় করা সম্ভব হবে।