খেলা বিভাগে ফিরে যান

ইস্ট বেঙ্গল জট কাটাতে আজ বৈঠকে বসছেন মমতা

August 25, 2021 | 2 min read

জট কাটছে। আজই। কারণ আজ, বুধবার বিকেলে ইস্ট বেঙ্গল কর্তা এবং লগ্নিকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্টকে নিয়ে বৈঠকে বসছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ক্লাব কর্তাদের অধিকাংশ শর্তই মেনে নিতে চলেছেন হরিমোহন বাঙ্গুর। অন্তত চলতি মরশুমের জন্য তো বটেই। অর্থাৎ, লাল-হলুদ সমর্থকদের মুখে হাসি ফেরাটা এখন এক বেলার অপেক্ষা। নজর? নবান্নের দিকে।

মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, তাতে ক্লাব তাঁবুর একক অধিকার পাবে না লগ্নিকারী সংস্থাটি। এমনকী, সদস্য-সমর্থকদের প্রবেশাধিকারে থাকছে না কোনও নিষেধাজ্ঞা। সমর্থকদের আবেগ তাঁদের ক্লাব তাঁবু। সেখানে অবাঞ্ছিত হয়ে যাওয়াটা কোনও সমর্থকের প্রাপ্য নয়। আর তাই এই বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, চুক্তিপত্রে একতরফা টার্মিনেশনের ব্যাপারটিও ভালোভাবে নেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই শতাব্দীপ্রাচীন ইস্ট বেঙ্গলের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য শেষ পর্যন্ত আসরে নেমেছেন তিনিই। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে তাই ধন্যবাদ জ্ঞাপনের ঢেউ তুলেছেন সমর্থকরা। তাঁদের আশা, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই কাটবে অনিশ্চয়তার মেঘ। আইএসএলে খেলবে প্রাণের চেয়ে প্রিয় ক্লাব ইস্ট বেঙ্গল।

গত এগারো মাসে ঘটনার ক্রমপর্যায়ে চোখ বোলালে বোঝা যাবে, অর্থ জোগানের বিনিময়ে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব কিনে নিতে চেয়েছিল লগ্নিকারী সংস্থাটি। কর্তারা শুরু থেকেই এ ব্যাপারে নিমরাজি ছিলেন। সদস্য-পরিচালিত ক্লাব তাঁরা হস্তান্তর করতে চাননি। সমস্যা মেটানোর জন্য এক টেবিলে আলোচনার অনুরোধও একাধিকবার করা হয়েছিল। কিন্তু সর্বগ্রাসী মনোভাব নিয়ে বাঙ্গুর অ্যান্ড কোং তা রাখার প্রয়োজন মনে করেনি। গোটা ব্যাপারটি মেনে নিতে কষ্ট হয়েছে ফুটবল অন্ত প্রাণ মুখ্যমন্ত্রীর। গত ২ আগস্ট নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তিনি বলেছিলেন, ‘ইস্ট বেঙ্গলের কি মনটা খারাপ-খারাপ? চিন্তা নেই। হয়ে যাবে। একটু চুক্তি-টুক্তি সমস্যা, ঝগড়াঝাঁটি, মনোমালিন্য হচ্ছে। কিন্তু আমি চাই, ইস্ট বেঙ্গল আইএসএলে খেলুক। শুনলাম, ক্লাবে সদস্যদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আশা করি, শীঘ্রই আপনাদের মুখে হাসি ফুটবে।’ 

গত অক্টোবর থেকে জুলাইয়ের মধ্যে শ্রী সিমেন্ট চারটি ড্রাফট ইস্ট বেঙ্গলকে পাঠায়। শহরের এক নামী আইনজীবীর মধ্যস্থতায় চুক্তিপত্রের বেশ কয়েকটি শর্ত পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্তু ১৬ আগস্ট ক্লাবকে পাঠানো শেষ চুক্তিপত্রে তার লেশমাত্র ছিল না। লক্ষ লক্ষ ইস্ট বেঙ্গল সমর্থকদের মতো যা হতাশ করে ক্রীড়াপ্রেমী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনকী, লগ্নিকারী সংস্থাটি তাঁকেও জানিয়েছিল যে, ক্লাবের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক দীর্ঘায়িত হচ্ছে। কিন্তু শেষ ড্রাফটিতে ক্লাব দখলের আগ্রাসী মনোভাব মোটেই ভালো চোখে দেখেননি মুখ্যমন্ত্রী। আর সোমবার সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে সম্পর্ক ছেদের ইঙ্গিত মিলতেই ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে তাঁর। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। এরপরেই পালের হাওয়া উল্টোদিকে বইতে থাকে। হরিমোহন বাঙ্গুর এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের কণ্ঠস্বরই তার প্রমাণ। গরম থেকে নরম হতে এক মুহূর্তও দেরি করেননি বুদ্ধিমান শিল্পপতি। এতদিন একটি ফ্যান ক্লাবের সদস্যদের হাতের মুঠোয় এনে লগ্নিকারী সংস্থাটি ময়দানে লড়াইয়ের বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টায় ছিল। সোমবারের পর তাদের বিপ্লবও অস্তগামী। তারা অনেকে গিয়েছেন, শান্ত বাংলায় অশান্তির ঢেউ রোখার জন্য রয়েছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। কথায় আছে, রাখে হরি মারে কে? 
এখন ইস্ট বেঙ্গলের প্রকৃত সমর্থকদের কাছে সমস্যার সমাধানের একটাই পাসওয়ার্ড, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #East Bengal

আরো দেখুন