আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে আসবেন না মোদী, হতাশ বিজেপি নেতা
নেতাজি সুভাষচন্দ্রের স্বপ্নের আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৮তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপিত হতে চলেছে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে। এই উপলক্ষে মোদী সরকার লালকেল্লায় একটি অনুষ্ঠান করছে। কিন্তু সুভাষচন্দ্রের পরিবার-সহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে অসংখ্য নেতাজি অনুগামীর অনুরোধ উপেক্ষা করে আজকের অনুষ্ঠানে হাজির হবেন না প্রধানমন্ত্রী। যদিও তিনি আজ রাজধানীতেই থাকছেন ভিন্ন কর্মসূচি। সরকারের তরফে লালকেল্লার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্কৃতি মন্ত্রকের দুই রাষ্ট্রমন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি ও অর্জুনরাম মেঘওয়াল সেখানে উপস্থিত হবেন। পূর্ণমন্ত্রী কিষান রেড্ডিও অনুষ্ঠানে না-থাকার কারণে গুঞ্জন ওঠায় শেষ মুহূর্তে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে হাজির করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। বসু পরিবারের তরফে নেতাজির নাতি চন্দ্রকুমার বসু একমাত্র আমন্ত্রিত হয়েছেন। এছাড়া আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ডাকা হয়েছে অতিথি হিসেবে। আইএনএ’র ইতিহাস নিয়ে প্রাক্তন সেনা কর্তা ও নেতাজি বিশেষজ্ঞ কর্নেল জি ডি বক্সির লেখা একটি বইয়ের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন অর্জুনরাম।
সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হওয়া সওয়া এক ঘণ্টার এই সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আইএনএ দিবসকে স্মরণ করার উদ্যোগকে বসু পরিবার-সহ বহু নেতাজি অনুগামী ‘চাঁদ সদাগরের বাঁ হাতে মনসা পুজো’র মতো মনে করছে। গোড়ায় যাবেন না বলে ঠিক করলেও শেষমেশ সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে অনুষ্ঠানে হাজির থাকলেও স্বয়ং চন্দ্রবাবুও বিশেষ খুশি নন এনিয়ে। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি এনিয়ে বিস্তর হতাশা ব্যক্ত করেছেন এদিন। দিল্লি পৌঁছে তিনি এদিন সেই ঘনিষ্ঠদের কাছে বলেছেন, ২১ অক্টোবর দিনটি কার্যত দেশের মূল স্বাধীনতা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া উচিত। তিনবছর আগে ৭৫তম দিবসে লালকেল্লায় তেরঙ্গা উত্তোলন করে প্রধানমন্ত্রী সেই ইঙ্গিতই দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর থেকেই কেন্দ্রের আর সেই উৎসাহ বা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না দিনটি নিয়ে। এনিয়ে মোদীকে পরিবার-সহ বিভিন্ন সংগঠনের তরফে চিঠি দিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আজকের অনুষ্ঠানে তাঁর ভাষণে চন্দ্রবাবু সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সামনে তাঁর মনের এই খেদের কথা ব্যক্ত করেন কি না, তার দিকেই তাকিয়ে সবাই।
সংস্কৃতি মন্ত্রক সূত্রের খবর, এবার ২১ অক্টোবরে লালকেল্লা চত্বরে একটি আইএনএ স্মারক স্থাপন বা শিলান্যাস করার পরিকল্পনা নিয়েছিল তারা প্রাথমিকভাবে। কিন্তু সেই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে না এখন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ জানুয়ারি নেতাজির ১২৫তম জন্মবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় এসে ওই স্মারকের উদ্বোধন করতে পারেন বলে আশা করছেন মন্ত্রকের আধিকারিকরা।