Bengali migrant workers: মমতাকে ভোট দাও? তাহলে বাংলাদেশ ফিরে যাও, BJP শাসিত গুজরাত-হরিয়ানায় আতঙ্কে বাংলার শ্রমিকরা!
পুলিশ বস্তির বাসিন্দাদের মারধর করেছে, কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে এবং ধর্ম ও রাজনৈতিক সমর্থন নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:৩১: আতঙ্কের রাত বাঙালিদের জন্য! গুজরাত-হরিয়ানায় ‘বাংলাদেশি’ তকমায় ১,০০০-র বেশি পরিযায়ী আটক। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে তৃণমূল। গুজরাত ও হরিয়ানায় “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী” তকমা দিয়ে চলছে পরিযায়ী বাঙালিদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান। শনিবার আহমেদাবাদ ও সুরাটে বড়সড় অভিযানে আটক করা হয়েছে ১,০০০-র বেশি মানুষ, যাঁদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেন। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাংলা ভাষাভাষী শ্রমজীবীদের মধ্যে।
আহমেদাবাদ থেকে অন্তত ৮৯০ জন ও সুরাট থেকে ১৩৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সুরাটে ভোরবেলায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে অংশ নেয় বিভিন্ন থানার পুলিশ, স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (SOG) ও ক্রাইম ব্রাঞ্চ (DCB)। আটক ব্যক্তিদের নথিপত্র যাচাইয়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিটি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে। পুলিশের দাবি, যাচাইয়ের পর “অবৈধ বাংলাদেশিদের” দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
তবে বহু আটক ব্যক্তিরই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বৈধ ভোটার ও আধার কার্ড। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, কোনও যাচাই ছাড়াই রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ কাজের জায়গায় যেতে সাহস পাচ্ছেন না, কেউ বা রাতের ঘুম হারিয়েছেন।
এই ঘটনার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই কি কাউকে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হবে? কেন্দ্রের শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্দেশে তারা জানতে চেয়েছে, বাংলাভাষীরা কি তবে ভারতীয় নয়? তৃণমূল মনে করিয়ে দিয়েছে, বাংলা না থাকলে দেশ স্বাধীন হতো না। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির গর্বে তারা প্রাণ দিতেও প্রস্তুত, কিন্তু মাথা নোয়াবে না। দলীয় নেতৃত্বের দাবি, এ এক বিপজ্জনক দেশভাগের ষড়যন্ত্র।
এছাড়াও হরিয়ানার গুরুগ্রামে বাঙালিদের উপর ‘নির্যাতনের’ অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। দলটির অভিযোগ, নম্বরবিহীন গাড়িতে রাতের অন্ধকারে ঢুকে পুলিশ বস্তির বাসিন্দাদের মারধর করেছে, কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে এবং ধর্ম ও রাজনৈতিক সমর্থন নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। অনেককে নাকি উলঙ্গ করে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, “তুমি হিন্দু না মুসলিম? কাকে ভোট দাও? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে? তাহলে বাংলাদেশ ফিরে যাও।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দলের সাংসদরা জানান, তিনজন এখনও নিখোঁজ। স্থানীয়দের আশঙ্কা, তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, এই কর্মকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে মোদী সরকারের “বাঙালি বিদ্বেষী” নীতি। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী, যিনি সম্প্রতি বলেছিলেন, “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের হরিয়ানায় কোনও জায়গা নেই।”